চল্লিশ বছর পর উত্তারাধিকার সম্পদ ফিরে পেলেন প্রবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ৫ মার্চ ২০২৫, ৩:৫৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজার জেলা শহরের পূর্বপুরুষ সৈয়দ মীরনের উত্তরাধিকার আমেরিকা প্রবাসী সৈয়দ জহির হাসান দখল হয়ে যাওয়া তার সম্পদ ফিরে পেয়েছেন। প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর ভাইদের দখলে ছিল মৌলভীবাজার শহরের কাজিরগাও ২২ কিয়ারের একটি খামার বাড়ি। সেই সম্পদ আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর প্রকৃত মালিক সৈয়দ মিরনের উত্তারাধিকার সৈয়দ জহির হাসানকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
সম্প্রতি সেই বাড়িতে নিজেদের অবস্থান নিতে সক্ষম হন তারা। এবিষয়ে সৈয়দ জহির হাসান বলেন, অনেকেই মনে করতে পারেন আমি দখল করেছি। কিন্তু এটা আমাদের ঘর, আমাদের বাড়ি। আমার চাচা সৈয়দ মহসীন আলী ক্ষমতার বলে ১৯৮৭ সালে আমাদেরকে ঘর থেকে উচ্ছেদ করে সম্পূর্ণ সম্পদ দখল করেছিলো। এরপর থেকেই আমরা আর আমাদের বাড়িতে আসতে পারিনি। আমরা একটা মামলা করেছিলাম জজ কোর্টে। আমরা সম্পূর্ণ সম্পদ পাওয়ার জন্য মামলার রায় পেয়েছি। কিন্তু আমরা সম্পদ ফিরে পাইনি ক্ষমতার জুড়ের কারণে। অনেক ত্যাগের পর অনেক সাধনার পর আমি আমার জায়গায় ফিরে এসেছি।
তিনি বলেন, এই সম্পদ আমার পূর্বপুরুষের। আমার পূর্বপুরুষ সৈয়দ মিরন। উত্তরাধীকার সূত্রে নবম প্রজন্ম আমরা এই সম্পদের উত্তরাধিকার। সৈয়দ আনকার আলী ও সৈয়দ আসকার আলীর বোনকে বিয়ে দিয়েছিলেন আমার দাদা সৈয়দ রমজান আলীর কাছে বিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সূত্রে সৈয়দ আনকার আলী এই বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। এই সুযোগে উনার লোভ হয়ে গেল। আমাদের সম্পদের এক বছরের খাজনা বাকি দেখিয়ে উনি নিলামে উঠিয়ে কেরামত আলীর মাধ্যমে ডাক নিলেন। পরে কলকাতা নিয়ে তারা আনকার আলী ও আনহাব আলীর নামে চৌহদ্দি দিলেন সাড়ে ১০ কিয়ারের আর সম্পূর্ণ সীমানা দিলেন ২৪ কিয়ারের। তখনকার সময় এক দলিলে সাড়ে ১০ কিয়ারের বেশি রেজিস্ট্রি হতো না। পরে আরো অনেক পায়তারা করে রেজানউল্ল্যাহর নামে দলিল করে। কিন্তু আদালতে এসব কোন দলিলই ঠিকেনি। আমাদের সম্পদ আমাদের নামে চলে এসেছে। কিন্তু ক্ষমতার কাছে হেরে আমি আমার জমিতে আসতে পারিনি। আমাদের ঘর বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমার খুবই কষ্টে দিন যাপন করছিলাম।
তিনি বলেন, এই সম্পদে আমাদের পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। যেখানে আমাদের আদি পিতা সৈয়দ মিরনের কবর রয়েছে। ১৯৯৫ সালের ১২ই জুন এই কবরস্থানে আমার দাদাকে দাফন করার জন্য কবর করেছিলাম। কিন্তু সৈয়দ মহসীন আলী ও তার ভাই সৈয়দ লিয়াকত আলী কবরে আবার মাটিচাপা দেয়। আমাদের কবর দিতে দেয় নাই। কতটুকু অমাণবিক হলে তারা এই কাজটি করতে পারে। আমার মায়ের কবরটাকেও তারা সংস্কার করতে দেয় নাই।
কাজিরগাঁও এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, আমরা যতটুকু জানি এই সম্পদ সৈয়দ জহির হাসানের বংশধররাই। অনেকে জন্মের পর থেকে দেখে এসেছেন এই বাড়ির আসল মালিক জহির। কিন্তু মহসিন আলীর পরিবার দখল করে রেখেছিলো।
এবিষয়ে সৈয়দ লিয়াকত আলী বলেন, এই সম্পত্তির মালিক আমরা। দীর্ঘদিন মামলা মুকাদ্দমার পর হাইকোর্ট আমাদের রায় দেয়। আবার সৈয়দ জহির রিট করে। এটি এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এটি মিমাংসা করার জন্য সৈয়দ মহসীন আলী অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু জহির গংরা আসেনি। বর্তমানে প্রভাব খাটিয়ে জহির গংরা আমাদের লোকদের মারধর করে বাড়িটি দখলে নেয়।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি মো. মাহবুব বলেন, আমার কাছে লিয়াকত গংরা আসলে আমি বলেছি জমির কাগজ নিয়ে আসেন। কিন্তু তারা কেউ নিয়ে আসেননি। এলাকার মানুষের বক্তব্য অনুযায়ী সৈয়দ মীরনের উত্তরাধিকার।