ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ মার্চ ২০২৫, ৪:০৯ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের হবিগঞ্জ বাহুবল থানার রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের সামনে মেইন রোডে গাছ কেটে ফেলে যানবাহনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতি করেছে ডাকাতরা।
রোববার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। এসময় সড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকিয়ে ডাকাতি করে ডাকাতরা নিরাপদে চলে যায়।
‘নিউজ শ্রীমঙ্গল’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে এক ব্যক্তি লাইভে জানান, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের সামনে গাছ ফেলে অনেক গাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে। সাতগাঁও পুলিশ হাইওয়ে থানার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
লাইভে তিনি জানান, প্রায় এক দেড় ঘণ্টা পর সাতগাঁও হাইওয়ে থানা ও কামাইছড়া ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
শ্রীমঙ্গলের বাসযাত্রী প্রত্যক্ষদর্শী শেখ আল নোমান জানান, আমি যে গাড়িতে ঢাকা থেকে আসছিলাম, তার সামনের তিনটি গাড়িতে ডাকাতি শেষে যখন আমাদের গাড়িতে আসবে, সেই সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী চলে আসায় আমাদের গাড়ির সবাইকে আল্লাহ হেফাজত করেছেন।
যাত্রী মো. জামাল জানান, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের সামনে ভয়াবহ ডাকাতি হচ্ছে। এসময় আমরা সড়কে জ্যামে আটকা পড়ি। পুলিশকে কল দিয়েছি, পুলিশ আসছি আসছি বলেছে কিন্তু পুলিশ সময় মতো আর আসে নাই।
ড্রাইভার মনতোষ চিটাগাংয়ের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের সামনে রাত ১১টা ২০ মিনিটে দেখেন গাছ ফেলে ডাকাতি হচ্ছে। এনা বাস, কভার্ড ভ্যান, ড্রাম ট্রাকে ডাকাতি হচ্ছিল। প্রায় একঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার কাছে ভিডিও আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শুভাষিশ আচার্য বাঁধন বলেন, প্রশাসনের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। কিছু দিন আগেও গাছ ফেলে ডাকাতি হলো। আবার আজ একই ঘটনা। পুলিশ এলো এক থেকে দেড় ঘণ্টা প। ইচ্ছাকৃতভাবেই দেরি করে আসে কিনা কে জানে?।
রুহুল আমিন নামে একজন বলেন, হায়রে পুলিশ, আসতে আসতে ডাকাতি শেষ।
তবে সাতগাঁও হাইওয়ে থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর সাইফুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এগুলো সব বোগাস কথা। আমরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি তখন সে লাইভ করেছে। আমার পার্টি ছিল আমতলী চা বাগানের পাশে, রশিদপুর আসতে পাঁচ-সাত মিনিট লেগেছে।
তার দাবি, রাত ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। কোনো গাড়িতেই ডাকাতরা হাত দিতে পারেনি। খালি একটা ড্রাম ট্রাক ছিল, এর ভিতরে আমরা সড়কে ফেলা গাছ কেটে সরিয়ে দেই। ঘটনাটি রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের পাশে ফিনলের পয়েন্টের পাশেই।
ওসি জানান, আমরা যাওয়ার পরে ৭-৮টি গাড়ি দেখতে পাই। আমাদের পুলিশের গাড়ি দেখেই ডাকাতরা পালিয়ে যায়। আমরা যাওয়ার সাথে সাথে ৫-৭ মিনিটের মধ্যে কামাইছড়া ফাঁড়ির পুলিশও এসেছে। আমি ফোন পাওয়ার সাথে সাথে মুভ করতে লেগেছে সাত মিনিট। আর আমার পার্টি আমতলী থেকে চলে আসতে ৩-৪ মিনিট লাগে। আর যে কয়টা গাড়ি সড়কের দুপাশে জমেছে, সড়কে ফেলা গাছ কাটতে কাটতে যে সময়টা লাগে এ সময়টার মধ্যে। আমাদের আসতে ৭ মিনিট লেগেছে, আর গাছ কাটতে লাগছে ১০ মিনিট। এই ১৭-১৮ মিনিট মোট সময় লেগেছে।
তবে কামাইছড়া পুলিশ ফাঁড়ি সাব-ইন্সপেক্টর জানান, রাত সাড়ে ১১টায় সড়কে গাছ ফেলা হয়েছে। আমি মুছাই থেকে রাউন্ড দিয়ে ক্যাম্পের ওদিকে গিয়েছি, আর পেছন দিয়ে ডাকাতরা সড়কে একটি কড়ই গাছ কেটে ফেলেছে। আমি আসতে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় লেগেছে। তার দাবি, সেখানে যানবাহনে ডাকাতির কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
তবে সাতগাঁও হাইওয়ে থানার ওসি বলছেন, রাত ১১টার দিকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আর কামাইছড়া পুলিশ ফাঁড়ি বলছে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকতির সময় নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে সড়কে পুলিশের দায়িত্বশীলতা নিয়ে।