মৌলভীবাজারে আহবায়ক কমিটির নেতৃত্বে চাঙা বিএনপি
প্রকাশিত হয়েছে : ১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
দলকে শক্তিশালী ও কর্মতৎপর করার লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় আহবায়ক কমিটি গঠনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি। আহবায়ক কমিটির নেতৃত্বে ৯০ দিনের ভেতর জেলার ৭টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। গত ২৮ নভেম্বর স্থানীয় পৌর জনমিলন কেন্দ্রে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মিটিংয়ে ৭ উপজেলায় কর্মীসভা করার লক্ষ্যে ৭টি সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়।
জেলা বিএনপির আহবায়ক সূত্র জানায়, এই সমন্বয় কমিটিকে কর্মীসভা আয়োজনের জন্য সুনির্দিষ্ট তারিখ বেধে দেওয়া হয়েছে। তাদের নেতৃত্বে উপজেলা ও পৌরসভার প্রতিটি ইউনিটের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করবে এবং নতুন নেতৃত্বের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করবে। এদিকে দীর্ঘদিন পর দল গোছানোর এমন কর্মসূচিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন জেলার প্রতিটি ইউনিটের নেতাকর্মীরা। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীর মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ আরও কিছু পদে নামোল্লেখসহ আংশিক কমিটি প্রকাশের পর ২০১৯ সালের এপ্রিলের প্রথম দিকে পূর্ণাংগ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। অন্যদিকে বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ বলয়ে ছিল বিভক্তি। তখনকার ক্ষমতাসীন দলের নিপীড়ন-নির্যাতন, হামলা-মামলা ও পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে নেতাকর্মীরা রাজপথে জোড়ালোভাবে তেমন কর্মসূচি পালন করতে পারেন নি।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক অঙ্গণে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদিকে কেন্দ্র চলতি বছরের গত ৪ নভেম্বর জেলা বিএনপির দ্বিধা-বিভক্ত কমিটি বাতিল করে ৩২ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়। এ কমিটি জেলার সব উপজেলা ও পৌরসভার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গত ১৫ নভেম্বর বিলুপ্ত ঘোষণা করে সংস্কার কার্যক্রমে হাত দেয়।
এ ধারাবাহিকতায় জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূনের সাক্ষরিত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার নেতাকর্মীর সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজনে ৭টি সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন আহবায়ক কমিটির জেলার নেতারা। একই সাথে উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে নেতৃত্বে আসীন হতে আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্তসংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় সমন্বয়ক কমিটিকে।
৫ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল উপজেলা ও পৌরসভায় নেতাকর্মীর সাথে মতবিনিময় সভা ও আগ্রহী প্রার্থীদের নাম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে। এ উপজেলায় সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, হাজী মুজিবুর রহমান, মহসিন মিয়া মধু, আবুল কালাম বেলাল, গাজী মারূফ আহমেদ। এরপর ৭ ডিসেম্বর কমলগঞ্জে দায়িত্ব পালনে রয়েছেন মৌলভী আব্দুল ওয়ালি সিদ্দিকী, দুরুদ আহমদ, মাহাবুব ইজদানী ইমরান, স্বাগত কিশোর দাশ চৌধুরী এবং শ্রীমঙ্গল কমিটির আরও দুইজন, ৯ ডিসেম্বর রাজনগরে বকশী মিছবাউর রহমান, মুহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, জিতু মিয়া, আশরাফুজ্জামান খান নাহাজ, ১২ ডিসেম্বর কুলাউড়ায় মোশারফ হোসেন বাদশা, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, হেলু মিয়া, আনিছুজ্জামান বায়েছ, ১৫ ডিসেম্বর জুড়ীতে মতিন বক্স, নাছির উদ্দিন মিঠু আব্দুল হক, সেলিম মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ১৭ ডিসেম্বর বড়লেখায় আব্দুল মুকিত, আশিক মোশারফ, আব্দুল হাফিজ, অ্যাডভোকেট বকশী জুবায়ের আহমেদ ও ২১ ডিসেম্বর সদর উপজেলা এবং পৌরসভায় মতবিনিময় সভার আয়োজনে নেতৃত্ব দেবেন ও প্রার্থীদের নাম সংগ্রহে দায়িত্ব পালন করবেন জেলা কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম নাসের রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ভিপি মিজান।
জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ১৫ নভেম্বর সব উপজেলা ও পৌর কমিটি বাতিলের পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে সবক’টি উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মী। দলীয় কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মাঝে এসব ইউনিটে আহবায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এরপর সময়সূিচ অনুসারে সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচিত করার নির্দেশ রয়েছে কেন্দ্রের।
জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম ময়ূন জানান, দলের দুর্দিনে রাজপথে থাকা ত্যাগী ও যোগ্যতাসম্পন্ন নেতাদের সমন্বয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিএনপির বলিষ্ট নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে সব ধরণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান উপজেলা ও পৌর কমিটির সম্মেলন শেষে জেলা কমিটির সম্মেলন আয়োজন করে কাউন্সিলরদের ভোটে যুগোপযোগী নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।