মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগ নেতাকে রক্ষায় বিএনপির অবস্থান, উত্তেজনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
মৌলভীবাজারের রাজনগরে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে রক্ষায় অবস্থান নিয়েছে স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ। এনিয়ে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র দুইপক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ফতেপুর ইউপির চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দিচ্ছেন বিএনপির একাংশ। এদিকে দলের অপর একটি অংশ তাদের এমন দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যানকে তাঁর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা না দিতে আহ্বান জানিয়েছে। যার প্রেক্ষাপটে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিরাজ করছে উত্তেজনা।
চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে বাধাদানকারী বিএনপি নেতাকর্মীর দাবি, চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র জেলা আওয়ামী লীগের নেতা এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রোববার স্থানীয় মোকামবাজারে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এসব কথা বলেন বিএনপির একাংশের নেতারা।
জানা যায়, গত নির্বাচনে রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন নকুল চন্দ্র দাশ। নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশি নাগরিকত্বের ভুয়া সনদ প্রদানের অভিযোগ ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় বছর খানেকের জন্য তাঁকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে জেলা প্রশাসন।
সে সময় এই অভিযোগের ব্যাপারে চেয়ারম্যান নকুল দাশ জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সফটওয়্যার হ্যাক করে দুষ্টচক্র অপকর্ম করেছে। এ কাজে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এরপর জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন নকুল দাশ। পরে আদালত তাঁর বহিষ্কারাদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন।
দেশের পট পরিবর্তনের পর সম্প্রতি নকুল চন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শুরু করতে চাইলে তাতে বাধা দেন ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন, আমির আলীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।
অন্যদিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কমর উদ্দিনসহ স্থানীয় বিএনপির অপর একটি অংশের নেতাকর্মীরা চেয়ারম্যানের পক্ষে অবস্থান নেন। এ নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিএনপির একাংশের রোববারের কর্মসূচিকে ঘিরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনার জের ধরে এখনও বিএনপির দু’পক্ষ একে অন্যকে হুমকি পাল্টা হুমকি দিচ্ছে।
চেয়ারম্যানের বিরোধী পক্ষের নেতা ইউপি বিএনপির সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন জানান, রোহিঙ্গাদের জাল নাগরিকত্ব সনদদানকারী ও কাশিমপুর পাম্প হাউসের দুর্নীতি মামলার আসামি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্রকে এই ইউনিয়নের মানুষ চায় না। তাই তার বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কমর উদ্দিন জানান, জনগণের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান জনস্বার্থে কাজ করলে তাকে বাধা দেওয়ার এখতিয়ার কারো নাই।
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ জানান, হাইকোর্ট ৬ মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেছেন। তাছড়া গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। জনগণ তাকে চায় বলেই সেটা সম্ভব হয়েছে। ইউনিয়নবাসী আওয়ামী লীগকে না ব্যক্তি তাকে ভোটে দিয়ে বিজয়ী করেছেন।