মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাথে মতবিনিময়
আপনারা ঘুমাবেন, পুলিশ পাহারা দিবে: নতুন পুলিশ সুপার
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪:০০ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজার জেলার নতুন পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, পুলিশ ৫ আগস্টের আগে ছিল দখলদারদের বাহিনী, চাঁদাবাজ, লুটেরা। এরপর কোমলমতি ছেলেরা আমাদেরকে স্বাধীনভাবে চলার জন্য, মুক্ত ভাবে কথা বলার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তারা যে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল, তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আর কোন দখলদার, চাঁদাবাজ, লুটেরাদের টাই দেব না। এব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশ অঙ্গিকারাবদ্ধ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ সুপার এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিগত সময়ে পুলিশ রাজনৈতিক যে লেজুড়ভিত্তি নিয়ে কাজ করেছে বর্তমান সরকার পুলিশকে সেভাবে ব্যবহার করবে না। পুলিশ জনগণের সেবায় কাজ করবে। পুলিশ নতুন উদ্যোমে কাজ করবে। আপনারা ঘুমাবেন, পুলিশ পাহারা দিবে। কোন জায়গায় পুলিশের চাঁদাবাজি হবে না। আমি আপনাদের আশ^স্ত করতে চাই পুলিশের কোন চাঁদাবাজির তথ্য থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেব। পুলিশ চাঁদাবাজি করতে পারেনা, পুলিশ জনগণনের সেবক, পুলিশ নিজেই চাঁদাবাজ হলে তাহলে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কিভাবে ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ কোন চাঁদাবাজের পক্ষ নিবে না এবং চাঁদাবাজি করবে না। ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ মুখ তুবড়ে পড়ে ছিল। সকলের প্রচেষ্টায় পুলিশ ঘুরে দাড়াচ্ছে।
মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ফ্রি ভাবে চলাফেরা করবে। তারা আগের মতো চাঁদাবাজ হবেনা, দখলদার হবেনা, আগের মতো অনৈতিক কাজে জড়িত হবেনা। কোন পুলিশ মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে সমাজের কিছু ব্যক্তি ছিলেন, যারা আপনাদের সমাজের অংশ, যারা এই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা করেছিল, তাদের কেউ রেহাই পাবে না। কোনভাবেই ছাড় পাবার সুযোগ নেই। তারা আমাদের নিজেদের শত্রæ না, তারা স্বাধীনতার শত্রæ, তারা আমাদের মুক্ত ভাবে কথা বলতে দেয়নি, লিখতে দেয়নি, তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবেনা।
তিনি বলেন, কিছু সাংবাদিকদের মানুষ জাতির বিবেক মনে করতো। তারা ছাত্রদেরকে হত্যা করার জন্য উৎসাহ দিয়েছে। আর এমন সাংবাদিক ছিলেন যারা ছাত্রদের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য পাশে থেকেছিল। সব জায়গায় দূর্বৃত্তায়ন সব সময় ছিল। সেই একটা ঘোলাটে পরিবেশ ছিল, এটা থেকে আমরা রেহাই পেয়েছি। যেসমস্ত সেবা ধর্মী জায়গায় বৈষম্য আছে সেগুলো কিছু ব্যক্তি, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দলের পকেটে ছিল। সেই বৈষম্য দূর করবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজার জেলায় ১৯টি মামলা হয়েছে। এই মামলায় ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সুদর্শন কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহসিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সারোআর আলম, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম শেফুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রুমিসহ মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।