মৌলভীবাজারে শিক্ষকদের হেনস্থা ও জোরপূর্বক অপসারণ বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের
প্রকাশিত হয়েছে : ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮:১৪ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারসহ দেশ জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক একটি বিশেষমহল শিক্ষকদেও হেনস্থা করে অপসারণ বন্ধের দাবিতে মৌলভীবাজারে সমাবেশ করেছে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা’ নামক একটি সংগঠন। ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের শহীদ মিনার ফটকের সামনে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিশ্বজিৎ নন্দী এবং সঞ্চালনা করেন ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী জুলী আক্তার। বক্তব্য রাখেন, অভিভাবক ও সামাজিক সংগঠনের সংগঠক খসরু চৌধুরী, আইনজীবী এডভোকেট আবুল হাসান, এডভোকেট ফারজানা বিপুল, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছাত্রনেতা রাজিব সূত্রধর, শিক্ষার্থী মো. সালাউদ্দিন, রেহনুমা রশিদ নুরি, জুবায়েল আহমেদ, জিসান চৌধুরী, সালমান সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার মহিলা সরকারি কলেজ, শাহ মোস্তফা কলেজ, কাশিনাথ স্কুল এন্ড কলেজ, ইম্পেরিয়াল কলেজ, মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আলী আমজাদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনে ছাত্র সমাজ জীবনবাজি রেখে তার ওপর অর্পিত ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে প্রশাসন যখন মাঠে নেই সেই সময়েও এই ছাত্র সমাজ অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবেই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় নাই। ছাত্রসমাজ তা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে স্বদিচ্ছা থাকলে দেশকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা যায়। এমনকি এই বন্যায়ও আমাদের এই ছাত্র সমাজ সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু দেখার বিষয় এরই মধ্যে সারা দেশের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা জোরপূর্বক শিক্ষককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। যে শিক্ষার্থীরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করলো, সেই ছাত্র সমাজ কোন ভাবে আইন পরিপন্থী কোন কাজে যুক্ত থাকতে পারে না। আমাদের একদল আদর্শ শিক্ষক সমাজ দরকার, তাই বলে যদি শিক্ষকদের উপর হাত তুলি কিংবা উনাদের অপদস্ত করি কিংবা জোরপূর্বক অপসারণের মতো কাজে লেগে যাই তাহলে কি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? সমস্যার সমাধানের চেয়ে নতুন করে আরও সমস্যা তৈরি হবে।
তারা বলেন, দেশে যেহেতু আইন ব্যবস্থা রয়েছে ফলে নাগরিক হিসেবে আমাদের আইনের মাধ্যমেই কুচক্রী শিক্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে দেশে আইনের শাসন ছিলো না। তখন আওয়ামী লীগের কথার অবাধ্য হলেই শিক্ষকদেরকে তারা লাঞ্ছিত করতো, নির্যাতন করতো। আবার এই শিক্ষকদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে বা রাজপথে আবার ছাত্ররাই শিক্ষক নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাবি তুলে ছিলো। কিন্তু আমরা এ-ও দেখেছি দলীয় প্রভাব কাটিয়ে বা দালালী করতেও অনেক শিক্ষকদের বিবেকেও বাধে নাই। এমন দুশ্চরিত্রের শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রমাণসরূপ চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসলে তবেই না ভালো কিছু প্রতিফলিত হবে। জোরপূর্বক অপসারণের মতো কাজে আমরা যুক্ত না হয়ে শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করি এবং সবাই মিলে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ কাজ চালিয়ে যাই এবং যেখানে অন্যায় সেখানে আমরা একসাথে মোকাবেলা করতে সচেষ্ট থাকি। আমরা সবাই মিলে একটা বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে বদ্ধপরিকর।