পূর্বদিকে সংবাদ প্রকাশ
কমলগঞ্জের আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনে স্থিতাবস্থা জারি
প্রকাশিত হয়েছে : ১ জুলাই ২০২৪, ৮:১৩ অপরাহ্ণ
পরে আদলতে আজীবন দাতা সদস্য জহুরা বেগম চৌধুরী ও বয়তুল হক চৌধুরীর বাদি হয়ে বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক মিছবাউর রহমান চৌধুরী, ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাঈদ নাজমুল হাসানকে মূল বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং: ৯৫/২০২৪)। মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ‘চেয়ার দখলে নিতে’ অনিয়মের মধ্য দিয়ে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের স্কুলের কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ২৭ জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী। গত ২৯ জুন কালবেলায় চেয়ার দখলে নিতে ভোট ছাড়াই ‘স্কুল পরিচালনা কমিটি’- শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফান্ড আত্মসাৎ ও চেয়ার দখলে নিতে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের কমিটি দখলে নিতে চায় একটি সিন্ডিকেট। সদ্য উপজেলা নির্বাচনকালীন সময়ে এ বিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক যখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, সেই সময়ে কারও মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে কাগজে কলমে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে রেকর্ড করা হয়। যারা প্রার্থী হয়েছিলেন কৌশলে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে সিলেকশনে অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনীত করা হয়। কোনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হয়নি।এ ঘটনায় অনেক অভিভাবক ও এলাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য হিসেবে অনেকের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েছেন। কারও মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে একটি সিন্ডিকেট বাহিনী তাদের মনোনীত লোকদের অভিভাবক সদস্য মনোনীত করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে সভাপতি নির্বাচিত করার পূর্ব নকশা করে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুরে অবস্থিত আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৬ মে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা। ২৩ জুন অভিভাবক সদস্য ৫ পদে ৫ জনের বেশি প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা নির্বাচিত হন। গত ৩০ জুন ছিল সভাপতি মনোনয়নের ধার্য তারিখ। আদালতের স্থিতাবস্থা জারির কারণে সেই কার্যক্রম স্থগিত হয়।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী জানান, কমিটি ও চেয়ার নিজেদের দখলে নিতে একটি চক্র- যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন। অনেককে ভয় দেখিয়েও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। মূলত স্কুলে ফান্ড লুটপাট করা তাদের মূল লক্ষ্য।
আজীবন দাতা সদস্য জহুরা বেগম চৌধুরী বলেন, আমি একজন দাতা সদস্য। আমি জানি না অথচ তারা নির্বাচন করে ফেলে। এখানে প্রধান শিক্ষক একটি সিন্ডিকেট বানিয়ে বিদ্যালয়কে জিম্মি করে রেখেছেন।
মামলার বাদী বয়তুল হক চৌধুরী বলেন, আমাকে সভাপতি মনোনয়ন কারার জন্য বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। আমি ইচ্ছা পূষণ করি। কিন্ত এখানে বন্যা ও উপজেলা নির্বাচনের আড়ালে গোপনে নোটিশ দেয়া হয়।ভোট ছাড়াই অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করেন।এখানে প্রধান শিক্ষক সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পায়তারা করছেন।
ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাঈদ নাজমুল হাসান বলেন- অভিভাবক, শিক্ষক ও দাতা সদস্য পদে ৯টি পদে ১০ জন প্রার্থী ছিলেন। একজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় ভোটগ্রহণ হয়নি। যার কারণে সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৩০ জুন আমরা সভাপতি মনোনয়নের জন্য মিটিংএ বসি। আদালত থেকে স্থিতিবস্থা আসায় স্থগিত রাখা হয়।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন বলেন, আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমি প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করতে পারি, এর বেশি হস্তক্ষেপে করার সুযোগ নেই। অভিযোগকারী আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত মনোনয়ন কার্যক্রমে স্থিতিবস্থা জারি করেন।