মৌলভীবাজারে তরুণ হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে আসামী করে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ নভেম্বর ২০২৩, ৫:০৬ অপরাহ্ণ
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের টিভি হাসপাতাল এলাকার বর্ষিজোড়া গ্রামে মো. চেরাগ মিয়ার সাথে প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের সাথে ঝগড়া হয়। নুরুল ইসলাম দাবি করেন তার ছবি ব্যবহার করে চেরাগ মিয়া ফেইক আইডি চালাচ্ছেন। এর ঘটনার জেরে শুরু হয় হাতাহাতি। এরপর্যায়ে চেরাগ মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম নাঈমকে অস্ত্র দিয়ে আহত করেন নুরুল ইসলাম, তার ছেলে রনি মিয়া ও সহযোগীরা। এতে নিজ বাড়িতেই নাঈমের রক্তক্ষরণ হয়। নাঈমের বাবা-মা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হলে তার মৃত্যু হয়। দুই ভাই ও একবোনের মধ্যে পরিবারে সবার বড় নাঈম। সে এ বছর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। এঘটনায় নাঈমের বাবা দশ জনের নাম উল্লেখ করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার (মামলা নং:৮/৩৪০) আসামীরা হলেন, বর্ষিজোড়া এলাকার নুরুল ইসলাম (৫৫), তার ছেলে রনি মিয়া (২৩), কাদির মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৪), ইদন মিয়ার ছেলে সোহান মিয়া (১৯), আব্দুল আজিজের ছেলে মো. সাইমন ইসলাম, ইদন মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (২১), আলামিন মিয়া (২০), সাকিল হোসেন (২১), প্রধান আসামী নুরুল ইসলামের স্ত্রী পারভিন বেগম (৪৫) ও মেয়ে জেসি আক্তার (২০)সহ অজ্ঞাত ৪-৫জন।
নাঈমের বাবা মো. চেরাগ মিয়া বলেন, আমার প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের সাথে আমাদের কোন পূর্বশত্রুতা নেই। বিকালেও আমার বাড়িতে এসে চা খেয়েছেন। সন্ধ্যার পর তিনি আমাকে এসে বলেন আমি নাকি তার ছবি দিয়ে আইডি চালাচ্ছি। সেই সময় পাশের রুমে আমার ছেলে ছিল, সে এসে বলেছে ফেইক আইডি কে খুলেছে আমাকে দেখান, এখন প্রযুক্তির যুগ এগুলো বের করা যায়। একথা বলতেই তার উপর ক্ষেপে যায় নুরুল ইসলাম। এরপর শুরু হয় আমাদের দিকে মারধর। একপর্যায়ে নুরুল ইসলামের ছেলেসহ আরো ১২ থেকে ১৫ জন এসে পরে। আমার ছেলে, তার মা, চাচি, বোন ভয়ে অন্যরুমে লুকিয়ে যায়। তারা রুমের দরজা ভেঙে আমার ছেলেকে ধরে এসে ধারালো চাকু দিয়ে কুপায়। আমার চোখের সামনে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তারা চেয়েছিল আমার বাড়িতে লুটপাট ও ডাকাতি করবে, না পেরে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
নুরুল ইসলাম আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময় শাপলা টিভির সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতা পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এঘটনায় বর্ষিজোড়া এলাকায় চলছে শোকের মাতম। বুধবার রাতে মৌলভীবাজার শহরের দরগাহ জামে মসজিদের প্রাঙ্গনে নাঈমের জানাযা শেষে দাফন করা হয়।