‘পূজা বানচাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত কিছু নেতা’
প্রকাশিত হয়েছে : ২ অক্টোবর ২০২২, ৪:১৬ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
পূজাকে বানচাল করার অপচেষ্টায চালাচ্ছে ক্ষুধ পূজা উদযাপন পরিষদের কিছু নেতাই। এমন অভিযোগ করছে সম্প্রতির বাংলাদেশ মৌলভীবাজার জেলা শাখা।
শনিবার (১ অক্টোবর) সকালে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন সম্প্রতির বাংলাদেশ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সদস্য সচিব সৌমিত্র দেব।
এসময় তিনি বলেন, এদেশের মানুষের সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশের জন্ম। আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সেই লক্ষ্য থেকে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের উৎসবে আমরা শুভেচ্ছা জানাই। এটাই সম্প্রীতি। এর নামই বাংলাদেশ। আজ থেকে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্ম উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। এই উপলক্ষে সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর দেখা গেছে তৎপর হয়ে ওঠে কিছু সম্প্রীতি বিরোধী শক্তি। তারা বিভিন্ন অজুহাতে এ সময় হিন্দুদের ওপর আক্রমন করে। মন্দিরে হামলা চালায়। মুর্তি ভাঙচুর করে। এদেরকে মোকাবেলা করা শুধুমাত্র আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য সমাজে সম্প্রীতি খুব বেশী জরুরী।
তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গা পূজার সম্প্রীতি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি সম্প্রীতি সংঘ। কুলাউড়া উপজেলার উচাইল গ্রামে গত বছর থেকে এই পূজা শুরু হয়।সম্প্রীতি বাংলাদেশের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী সুনির্মল কুমার দেব মীন এই পূজার আয়োজক বা প্রতিষ্ঠাতা। এখানে জমি দিয়েছেন একজন মুসলমান ভদ্রলোক ।
সৌমিত্র দেবের অভিযোগ, সম্প্রীতি সংঘের এই উদ্যোগকে বানচাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত কুলাউড়া উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের কিছু নেতা। তারা আমাদের প্রতিনিধিদের কাছে পূজার তালিকাভুক্তির জন্য উৎকোচ চেয়েছে সেটা না পেয়ে বিভিন্ন ধরণের ভয় ভীতি প্রদর্শন করেছে। পূজা কমিটির সভাপতি প্রবাসী হলেও একজন নীতিবান অধ্যাপক। তিনি কোন ধরনের অনৈতিক প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় তারা গত বছর নানা ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ। আহসানের হস্তক্ষেপে শান্তিপূর্ণ ও সফলভাবে পূজা সম্পন্ন হয়। পরবর্তীকালে পূজা উদযাপন পরিষদের সেই দুর্নীতিবাজদের কমিটি সাসপেন্ড করা হয়েছে। বর্তমানে একটি আহ্বায়ক কমিটি আছে। কিন্তু এ বছর সেই আহ্বায়ক কমিটিও একই কায়দায় অনিয়ম করেছে। বিগত ২৯ আগষ্ট ২০২২ তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করার পরেও তারা সেটাকে গ্রাহ্য করেননি। উল্টো সম্প্রীতি সংঘের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন।
তিনি বলেন, কুলাউড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের এসব অনিয়মের কথা আমরা জেলার সভাপতি আতরঞ্জন দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মহিম দে কে জানিয়েছি। কিন্তু তারা ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছেন। উৎসব আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আমরা চাই সবাই শান্তিপূর্ন ভাবে যার যার ধর্ম পালন করুক। উৎসব উদযাপন করুক। কিন্তু সেখানে যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সেটা খুবই নিন্দনীয়। তালিকাভুক্ত না হওয়ার কারণে সম্প্রীতি সংঘের এই গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বাইরে চলে যেতে পারে। আর এতে করে যদি কোন দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার দায় কুলাউড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদকেই বহন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জাসদের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসম সালেহ সুহেল, নাট্যকার আনোয়ার হোসেন দুলাল, শিক্ষক আবুল কালাম প্রমুখ।