পানি কমলেও বাড়ছে রোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ জুলাই ২০২২, ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজার জেলায় বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে দিন দিন পানিবাহিত রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হাওরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ভাটি অঞ্চল এখন প্লাবিত থাকায় পানি ধীরগতিতে নামছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলায় এখন পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার দুইশত ৩৬ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ই আক্রান্ত হয়েছেন ১২২ জন। সবচেয়ে বেশি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার মানুষ। আক্রান্তদের মধ্যে ডায়রিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের মনু ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদ নদীর পানি গুলো ধীরগতিতে কমছে। গত ২৪ ঘন্টায় মনু নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। ধলাই নদীর পানি কমছে। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি কিছুটা বাড়ছে।
এদিকে জেলার কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার প্রায় বিশটির বেশি ইউনিয়ন এখন বন্যা কবলিত রয়েছে। গত কয়েকদিন পানি কিছুটা কমেছে। হাকালুকি হাওর ও কাউয়াদিঘি হাওরের তীরবর্তী এলাকা এখন পানিতে ডুবে রয়েছে। রাস্তাঘাট ও বসতবাড়িতে এখনও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এলাকার বৃষ্টি ও উজানের ঢলের পানি হাকালুকি হাওরে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে তা সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত কুশিয়ারা নদী দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। আবার রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর এলাকার পানি কাউয়াদিঘী হাওরে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে তা কুশিয়ারা নদীতে নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু কুশিয়ারা নদীতে এখন পানি বেশি। এ কারণে হাওরের পানি ধীরগতিতে কমছে। এ কারণে দুই উপজেলায় বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামছে না।
সিভিল সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দীন মোর্শেদ বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় ৭৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এ পর্যন্ত জেলায় বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে দুই হাজার জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যায় মৌলভীবাজারে সাতটি উপজেলা ও ৪১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬০ হাজার ১১টি পরিবারের ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪০০ সদস্য ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ১৪ হাজার ৩০৯টি ঘরবাড়ি ও ৪ হাজার ৬৮০ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। ৪৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।