মৌলভীবাজারে অপরিবর্তিত বন্যা, শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ৪ জুলাই ২০২২, ৪:৩৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
৬ দিন ধরে মৌলভীবাজারের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠা এবং কোথাও কোথাও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সার্বিকভাবে জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কবে খুলবে সে ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জুন থেকে দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যা প্লাবিত হয়। এতে এসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়। কুলাউড়ার ভূকশিমইল, কাদিপুর ও জয়চণ্ডী ইউনিয়নের ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যাকবলিত। এছাড়া ১২টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদরাসায় পানি উঠেছে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি লোকজন ঠাঁই নিয়েছেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, জেলায় মোট মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩২০টি। এর মধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে ৪১টি, পাঠদান বন্ধ রয়েছে ৬২টিতে এবং আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ২৯টিতে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জুড়ী উপজেলা।
এদিকে জুড়ীর সদর জায়ফরনগর, পশ্চিম জুড়ী ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৫টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদরাসা বন্যাকবলিত হয়েছে। সেখানেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে হাঁটুসমান পানি। প্রতিষ্ঠানের দুটি ভবনের দোতলায় আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে অন্তত শতাধিক পরিবারের ঠাঁই হয়েছে।
কুলাউড়ার রাবেয়া আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস ছালাম বলেন, কয়েক দিন আগে সামান্য পানি কমেছিল। তবে এরপর থেকে আর কমছে না। নিচতলার শ্রেণিকক্ষ ও অফিসেও এখনো হাঁটুসমান পানি। কবে যে দুর্দশা কাটবে, সেটা নিয়ে সবাই চিন্তিত।
কুলাউড়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইফতেখায়ের হোসেন ভূঁইয়া জানান, প্রতিদিনই বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে কোথাও পানি কমার খবর মেলেনি।
স্থানীয়রা জানায়, জুড়ী, কুলাউড়া ও বড়লেখা এলাকায় বৃষ্টি ও উজানের পানি হাকালুকি হাওরে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে তা সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত কুশিয়ারা নদী দিয়ে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু কুশিয়ারা নদীতে এখন পানি বেশি। এ কারণে হাওরের পানি ধীরগতিতে কমছে। এ কারণে দুই উপজেলায় বন্যা প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামছে না।
জুড়ীর বেলাগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, তার প্রতিষ্ঠানটি হাকালুকি হাওর ঘেঁষা এলাকায় পড়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীদের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীর পরিবার বিদ্যালয়ের দোতলায় আশ্রয় নিয়েছে।
জুড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো পানি আছে। পানি পুরোপুরি না নামলে সেখানে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়।