কয়েস সামির পরিষদকে বিজয়ী করতে মৌলভীবাজারবাসী ঐক্যবদ্ধ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুন ২০২২, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচন ২০২২ উপলক্ষে সুহৃদ সমাবেশের আয়োজন করে কয়েস সামি, জগলুল পাশা, আনোয়ার চৌধুরী, আব্দুল হান্নান পরিষদ।
শুক্রবার সকাল মৌলভীবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর হলরুমে এক সুহৃদ সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান এর সভাপতিত্বে সৈয়দ জগলুল পাশার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার পৌরসডার মেয়র মো ফজলুর রহমান, সভাপতি প্রাথী সি এম কয়েস সামি, ডাক্তার আহমদ পারভেজ জাবীন, অধ্যাপিকা ফাতেমা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন চৌধূরী, ফাহিমা খানম চৌধূরী মনি, আব্দুল মজিদ চৌধুরী মিন্টু, নাসির উদ্দিন আহমেদ মিটু, টি এইচ এম জাহাঙ্গীর।
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার জামাল আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আলোচকরা আগামী দিনের সুন্দর সিলেট বিভাগের লক্ষে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের এই পরিষদকে ভোট প্রদান সহ সব ধরনের সহায়তা কামনা করেন।মৌলভীবাজার জেলায় মেডিকেল কলেজ এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্হাপনার লক্ষ্যে কাজ করবেন বলে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দ একমত পোষণ করেন।
সি এম কয়েস সামি, একটি নামই একটি প্রতিষ্ঠান::
সি এম কয়েস সামি। তিনি সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জনাব এ সামি চৌধুরী পেশায় একজন বিচারক ছিলেন। সি এম কয়েস সামি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বহরা গ্রামের জনাব আহমেদুল বর চৌধুরী (এৰি চৌধুরী) এর জামাতা । তিনি তদাস্তীন পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। সি এম কয়েস সামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ছাত্র অবস্থায় তৎকালিন জিন্নাহ হল (বর্তমান সূর্যসেন হল) এর যখন বার্ষিক ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয় তার সম্পাদকের দায়িতে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭২-১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি এই দেশের বৃহত্তম সরকারি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন তিনি সিfলেটের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। সিলেটের শিক্ষা, সংস্কৃতি,খেলাধুলা ও সমাজসেবা কর্মকাণ্ডে যে অবদান রাখেন তা চিরম্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি প্রকৃত পক্ষে সিলেট লায়ন্স ক্লাবের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি সিলেট শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর একটি কথা না বললেই নয়, সিলেটে প্রখ্যাত জেলা প্রশাসক জনাব মো: ফয়জুল্লাহর নেতৃতে সিলেটে প্রথম শিক্ষা ট্রাস্ট, প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্ট, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ট্রাস্ট গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৮০-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি যখন ঢাকায় কর্মরত ছিলেন তখন তিনি জালালাবাদ এসােসিয়েসনের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঐসময়েই জালালাবাদ ভবন ট্রাস্ট, শিক্ষা ট্রাস্ট ইত্যাদি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। জালালাবাদ এসােসিয়েশনকে একটি মডেল প্রতিষ্ঠান হিসাবে রূপান্তরিত করে উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি আজকের এই জালালাবাদ ভবনের জন্য প্রথম Fund Raising এ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
১৯৮৩-১৯৯০ সালে সি এম কয়েস সামি এই দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকে ব্যবস্থাপক হিসেবে তার নতুন কর্মজীবন শুরু করেন। তখন তিনি সিলেটের উন্নয়নে সকল সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সিলেট হার্ট ফাউন্ডেশন, ডায়বেটিক সমিতি, শিশু হাসপাতাল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
এমনকি সিলেটের দুটি প্রতিষ্ঠান সিলেট এয়ারপাের্ট ও সিলেট মেডিকেল কলেজের নাম জেনারেল মােহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী নামকরণেও তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ১৯৯০-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি কর্মরত চট্টগ্রামে ছিলেন। এ সময়ে (১৯৯১) স্মরণকালের ভয়াবহ সাইক্লোন হয়। সেই সাইক্লোনে সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই তিনি জরুরী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
বস্তুত, স্বরণকালের এই ভয়াবহ সাইক্লোনে যখন চট্টগামবাসী দিশেহারা, চট্টগ্রাম অঞ্চল যখন পুরােদেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন প্রায় তখন তিনি হতবিহ্বল চট্টগ্রামবাসীর পাশে এসে দাড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় চট্টগ্রামের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় উনার কর্তব্যবােধ, কর্মনিষ্ঠা এবং দেশপ্রেমের খবর ফলাও করে প্রকাশিত হয়। ১৯৯৬-১৯৯৯ সালে সি এম কয়েস সামি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা ভারতের বােম্বেতে স্থাপন এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এই ব্যাংকটি মাত্র তিন বছরের মধ্যে ভারতের সকল বিদেশী ব্যাংকের মাঝে পঞ্চম স্থান অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে ব্যাংকিং জগতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি যেমন অক্লান্ত পরিশ্রমী ও দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন, তেমনি তাঁর কাজের প্রতি ভালােবাসা নিষ্ঠা ছিল বলেই প্রায় অর্ধশত বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি ৫ টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ অলংকৃত করেছিলেন। তিনি এই দেশের বেসরকারি ব্যাংকের ATM পদ্ধতি প্রথম চালু করেছিলেন।
এইসব গুণাবলি দেখে ২০১১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বেসরকারি ব্যাংক থেকে সরকারি ব্যাংক প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়ােগ প্রদান করেন; কেননা ব্যাংকটি প্রধানমন্ত্রীর ‘Brain-Child’ হিসেবে তিনি খ্যাতির শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। মাত্র একদিনে প্রবাসীদের ঋণ দিয়ে এবং প্রবাসীদের কেউ যদি বিদেশে মৃত্যুবরণ করে তবে সেই ঋণ যেন তাদের উপর না বর্তায় সেই জন্য তিনি এক অভিনব ‘ইনস্যুরেন্স স্কীম চালু করেন ব্যাংকিং জগতে ব্যতিক্রমি উদাহরণ স্থাপন করেন। সি এম কয়েস সামি ব্যাংকিং জগতে যেমন একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন ঠিক তেমনি বহুমুখী প্রতিভাধর এ কর্মবীর শিক্ষাক্ষেত্রেও অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের ‘Alumni Association’ এর সাধারণ সম্পাদক এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ‘Alumini Association’ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
সূত্র: শুভানুধ্যায়ী, স্বজন ও সহকর্মীবৃন্দ কর্তৃক প্রকাশিত।