হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) এর ৬৮১তম উরুস অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ৮:২২ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিবেদক::
করোনা সংক্রমণের বিধিনিষেধের কারণে মৌলভীবাজারে এবার সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত হলো হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) উরুস ও মেলা। মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে তিনদিনের বদলে একদিন।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বাদ আছর মিলাদ মাহফিল, গরুর জবেহ ও জিকির আছকারের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৬৮১ তম উরুস মোবারক। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় গিলাফ ছড়ানো ও বাদ জোহর থেকে শিরনী বিতরণ করা হয়। বাদ এশাহ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে উরুস সমাপ্ত হবে। এদিকে সীমিত পরিসরে শাহ মোস্তফা সড়কে বসেছে মেলা উপলক্ষে দোকানপাট।
হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) মাজারের মোতাওয়াল্লি এবং উরুস উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সৈয়দ খলিলুল্লাহ ছালিক জুনেদ বলেন, করোনা সংক্রমণের বিধিনিষেধের কারণে এ বছর একদিনের উরুসের অনুমতি পাওয়া গেছে। যে কারণে শুধুমাত্র শনিবার (১৫ জানুয়ারি) উরুস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাদ এশাহ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ উরুস মোবারক।
তিনি বলেন, এ বছর হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) শের সওয়ার চাবুকমার হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাহবুবে এলাহির ৬৮১তম উরুস মোবারক। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বাদ আছর মিলাদ মাহফিল, গরুর জবেহ ও জিকির আছকার। শনিবার সকাল ৯টায় গিলাফ ছড়ানো, বাদ জোহর শিরনী বিতরণ। বাদ এশাহ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে উরুস সমাপ্ত হবে।
উল্লেখ্য মৌলভীবাজারে শতশত বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.)উরুস ও মেলা। এ বছর ৬৮১তম উরুস। গত বছর ২০২১ সালে করোনা সংক্রমণে স্বাস্থ্যবিধির কারণে উরুস ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
হযরত সৈয়দ শাহ মােস্তফা (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
হযরত সৈয়দ শাহ মােস্তফা (রহঃ) একজন বিশিষ্ট অলী ছিলেন। ইনি হযরত শাহ জালাল (রহঃ)-এর শাগরেদ এবং হযরত শাহ পরান (রহঃ)-এর পীরভাই ছিলেন। হযরত সৈয়দ শাহ মােস্তফা (রহঃ)-এর বংশ বিবরণে যতটুকু জানা যায়, তিনি শেরে খােদা হযরত আলী (রহঃ) বংশধর ছিলেন। তাঁহার পূর্বপুরুষ ব্যবসা উপলক্ষে মক্কা শরীফ হইতে বাগদাদ চলিয়া যান। তিনি বাগদাদ নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন এবং শিক্ষা-দীক্ষাও অর্জন করেন বাগদাদ নগরীতে। হযরত শাহ জালাল (রহঃ)-এর আধ্যাত্মিক প্রভাবে মুগ্ধ এবং আকৃষ্ট হইয়া তিনি তাঁহার নিকট এলমে মারেফাতের দীক্ষা গ্রহণ করেন। অতঃপর যথাসময়ে তিনি হযরত শাহ জালাল (রহঃ) এর এক প্রধান সহচর হিসাবে তাহার সহিত সিলেটে আসেন।
শ্রেষ্ঠ অলীর কিছুদিনের সাহচর্যেই হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (রহঃ) কামালিয়াতের উচ্চাসনে আরােহণ করিলেন। তখন হযরত শাহজালাল (রহঃ) তাহাকে দাওয়াতে দ্বীনের কাজে লাগাইয়া দিলেন। পীরের নির্দেশ মত ধর্ম প্রচারের কাজে নানাস্থানে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। অবশেষে তিনি মােস্তফাপুরে (বর্তমানের মৌলভীবাজার) আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বলা বাহুল্য যে, উক্ত স্থানটির মােস্তফাপুর নামকরণ তাহার নিজের নামের দ্বারাই হইয়াছিল। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি ঐস্থানেই ছিলেন। এস্থানে থাকিয়া বহু লােককেই তিনি খাটি ধর্মালােকে আনয়ন করিয়াছেন। ঐ সময়ে ত্রিপুরা রাজ্যের অধীনে বর্ষিজুড়া নামে একটি পার্বত্য এলাকা ছিল। সেখানে চন্দ্র নারায়ণ নামে এক সামন্ত রাজা রাজত্ব করিতেন। রাজা অত্যন্ত দাম্ভিক এবং উচ্চাভিলাসী ছিলেন। হযরত সৈয়দ শাহ মােস্তফা (রহঃ) যে স্থানটিতে বসিয়া ধর্ম প্রচার করিতেন, তাহা রাজা চন্দ্র নারায়ণের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।