বিপন্ন ‘লাল ঘাড় ঢোড়া সাপ’ সাপ লোকালয়ে
প্রকাশিত হয়েছে : ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৫:৩৫ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার ::
ঢোড়া সাপ, কিন্তু বিষাক্ত। এটা বিশ্বাস হবার নয়। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কলাবাজার থেকে ‘লাল-ঘাড় ঢোরা’ সাপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন।
সোমবার (১ ফেব্রæয়ারি) বিকেলে বন্যপ্রাণী ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব এটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন সেবাশ্রমে।
তিনি জানান, একটি সাপ হঠাৎ দেখে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে আমাকে ফোন দেয়। পরে আমি শ্রীমঙ্গল শহরের কলাবাজারে গিয়ে এটিকে নিয়ে আসি। কলায় ছড়ির ভেতরে করে সাপটি প্রাকৃতিক বন থেকে এখানে আসতে পারে।
তিনি বলেন, “এই সাপটির ইংরেজি নাম রেড-নেক কিলবেক (জবফ-হবপশবফ কববষনধপশ)। লাল-ঘাড় ডোরা সাপ ছাড়াও বাংলায় একে লাল-ডোরা সাপ বলে। এরা দিবাচর অর্থাৎ দিনের বেলা বিচরণ করে। উত্তেজিত হলে গোখরা সাপের মতো মাথা উঁচু করে ফনা তুলতে পারে। এরা বিষধর এবং তাদের কামড়ে তীব্র বিষ লক্ষ্য করা যায়। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনের পরিত্যক্ত জলাশয়, আর্দ্র তৃণভূমি প্রভৃতিতে এদের পাওয়া যায়। এরা বিপন্ন প্রজাতি। শীঘ্রই লাউয়াছড়া বনে সাপটি অবমুক্ত করা হবে’।
বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী সাপ বন্যপ্রাণীদের মধ্যে অতি পরিচিত। মানুষের সাথে এর অবস্থান খুব কাছাকাছি হওয়ায়, সাপকে নিয়ে প্রচলিত রয়েছে, ভীতি আর কুসংস্কার। এছাড়া রয়েছে রূপকথার গল্প। সাপের সাথে মানুষের সংঘর্ষ হয় প্রচুর। অজ্ঞতা ও অসাবধানতার জন্য প্রতিবছর সাপের কামড়ে মারা পড়ে অনেক মানুষ। ঠিক তেমনি মানুষের হাতে মরে যাচ্ছে অনেক সাপ, হোক তা নির্বিষ অথবা বিষধর। তেমনি এক রহস্যময় সাপ লাল ঘাড় ঢোড়া সাপ বা Red Necked Keelback (Rhabdophis subminiatus) যা বাংলাদেশে তথা পৃথিবীতে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। মাঝারি আকৃতির সাপটির শরীরের উপরের অংশ জলপাই বাদামী অথবা সবুজ রঙের এবং হলুদ ও কালো রং এর জালিকা আকারের ছোপ পুরো শরীরে বিদ্যমান। ঘাড় সিঁদুর রং এর। চোখের নিচে একটি কালে দাগ বিদ্যমান। আর শরীরের নিচের অংশ হলদেটে।
লালঘাড় ঢোড়া সাপ দিবাচর। সাধারণত বনজঙ্গল, তৃণভূমি, ধানক্ষেত, পুকুর ও ডোবায় এর দেখা মেলে। ব্যাঙ, টিকটিকি ও ছোট স্তন্যপায়ী এর প্রধান খাবার। জুন-জুলাই মাস এদের প্রজনন কাল। স্ত্রী সাপ ৫-১৭টি ডিম পাড়ে। স্ত্রী সাপ পুরুষ থেকে আকারে কিছুটা বড়।