৬ জনকে আসামী করে মামলা-হামলাকারীকে যুবলীগ নেতাকে অব্যাহতি
যুবলীগ সম্পাদকের উপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত কুলাউড়া
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ৩:২২ অপরাহ্ণ
কুলাউড়া পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতার উপর প্রতিপক্ষের হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কুলাউড়া। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে কুলাউড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান বক্সকে যুবলীগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
হামলা ও অব্যাহতির ঘটনায় (১৮ জানুয়ারী) সোমবার সারাদিন প্রতিবাদী মিছিলের মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত ছিলো কুলাউড়া পৌর শহর। অব্যাহতি প্রাপ্ত কামরুল হাসানের নেতৃত্বে যুবলীগের সম্পাদক মইনুল ইসলাম সবুজের উপর হামলা হয়েছে দাবি করে উপজেলা যুবলীগের নেতৃত্বে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এছাড়াও সবুজের নিজ ইউনিয়ন ভুকশিমইলবাসীর উদ্যোগে এবং কুলাউড়া ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মিছিল ও মানবন্ধন করা হয়।
অপরদিকে কামরুল হাসান সমর্থক গোষ্ঠি উল্লেখ করে একটি ব্যানারে উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় সম্মুখে পাল্টা মানববন্ধন ও মিছিলের ডাক দিলে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পুরো শহর। পরে পুলিশ পদক্ষেপ নিলে কামরুল হাসান সমর্থকরা তাদের মানবন্ধন করতে পারেনি।
স্থানীয়, পুলিশ ও মামলার এজহার সূত্র জানা যায়, ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কুলাউড়া পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা না করা নিয়ে সবুজ ও কামরুলের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে রবিবার সকালের দিকে কুলাউড়া পৌর শহরের উছলাপাড়া এলাকায় কামরুলের নেতৃত্বে তাঁর সহযোগীরা প্রথমে সবুজদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হামলা চালান। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাঁরা নগদ প্রায় ১৫ লাখ টাকা লুট করে নেন। বাধা দিলে তাঁরা সবুজকে ধাওয়া করেন। আত্মরক্ষার্থে তিনি পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। তাঁর শরীরের আটটি স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপে অঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে অবস্থা গুরুত হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় ময়নুল ইসলাম সবুজের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম তৈমুজ বাদী হয়ে ১৭ জানুয়ারি রাত ৯ টায় কামরুল হাসানসহ ছয় জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় মামলা (নং-১১) দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুল হাসান বখস নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজান মিয়ার পক্ষে ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে সবুজের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে কামরুল হাসান বখস বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন। সবুজসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বর্তমান মেয়র শফি আলমের পক্ষে কাজ শুরু করেন। রবিবার সকালে তিনিসহ আরও কয়েকজন উছলাপাড়া এলাকায় সবুজদের দোকানের সামনে যান। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু হয়। তাঁরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় ইটের আঘাতে সবুজের মাথা ফেটে যায়। লুটপাটের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, কামরুল হাসান সহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।