logo
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • স্থানীয় সরকার
    • মৌলভীবাজার
    • সিলেট
  • সাহিত্য-সংস্কৃতি
  • ঝিঙেফুল
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • আরও
    • শিক্ষাঙ্গন
    • ইসলামী জিন্দেগী
    • অর্থ ও বাণিজ্য
    • স্বাস্থ্য-কথন
    • পত্রিকা
    • মুক্তমত
    • শিক্ষাঙ্গন
    • সাফল্য
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • মৌলভীবাজার
  • সিলেট
  • প্রবাস
  • সম্পাদকীয়
  • অর্থ ও বাণিজ্য
  • স্থানীয় সরকার
  • খেলাধুলা
  • ছড়া সমগ্র
  • ঝিঙেফুল
  • নারী ও শিশু
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • বিনোদন
  • মুক্তমত
  • ইসলামী জিন্দেগী
  • শিক্ষাঙ্গন
  • সাফল্য
  • সাহিত্য-সংস্কৃতি
  • স্বাস্থ্য-কথন
  • পত্রিকা
  • ফটোগ্যালারী
  1. প্রচ্ছদ
  2. প্রচ্ছদ

‘‌সেলিব্রেটি হুজুরদের’ কান্ডকীর্তি!


প্রকাশিত হয়েছে : ৮ আগস্ট ২০২০, ৯:২২ অপরাহ্ণ

সালাহ্ উদ্দিন ইবনে শিহাব ::  অভিধানে সেলিব্রেটি শব্দের অস্তিত্ব থাকলেও আমাদের কাছে ফেইসবুক জামানায় এসে এ শব্দটি বহুল পরিচিতি পেয়েছে। সুযোগ যখন আছে তখন কার না শখ জাগে সেলিব্রেটি হওয়ার! কিন্তু এতো এতো সেলিব্রেটির ভিড়ে কেবল ‘সেলিব্রেটি’ শব্দটাই লজ্জায় মরে যাচ্ছে। এক সময় বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শি পন্ডিত ব্যক্তিদের আমরা বিশেষজ্ঞ, বিশারদ বা তাদের নামের আগে-পরে বিশেষণের সাথে ‘বিদ’ শব্দ যোগ করতাম। কিন্তু সেলিব্র্রেটির রমরমা মার্কেটে এসব উপাধি এখন লোকান্তরিত। কেউ আর বিশারদ হতে চায় না। সবাই সেলিব্রেটি হতে চায়। ফেইসবুক, ইউটিউভে যার যতো বেশি ফলোয়ার, লাইকার, ভিউয়ার, কমেন্টার, শেয়ারকারি তিনি ততো বেশি সেলিব্রেটি। সেলিব্রেটির ভূতে কাতরাচ্ছে সবাই। হায় সেলিব্রেটি! এ জীবনে তোমাকে আমার আর পাওয়া হবে না!

তো- কেউ সেলিব্রেটি হলে আমার এতো জ্বলে কেন? না ভাই। কেউ সেলিব্রেটি হওয়াতে আমার কোন জ্বালাপোড়া নেই। আফসোসও নেই। কারো পোস্টে বেশি বেশি লাইক, কমেন্টস বা শেয়ার নিয়ে আমার কোন হিংসা নেই। আবার আদিখ্যেতাও নেই। একজন ভালো মানের কণ্ঠশিল্পী, চিত্রশিল্পী, চিত্রনায়ক বা চিত্রনায়িকা, হুজুর, মাওলানা, আল্লামা কিংবা রাজনৈতিক নেতার লাখে লাখে ফলোয়ার ও ভক্তবৃন্দ থাকতেই পারে। এ কারণে তিনি যদি সেলিব্রেটি হোন তো দোষ কি? কর্মগুণে বা সৃজনশীলতায় কেউ যেকোন ‘ব্রেটি’ বনে গেলে আমার আপত্তিও নেই, মনোকষ্টও নেই।

আমি সামান্য সাংবাদিক। লেখালেখিই পেশা। ইসলামের প্রতি হৃদয়ের চেয়ে বেশি দরদ ও অনুরাগ অনুভব করি। এই দরদ থেকে যখন দেখি কেউ ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ্য করে; ইসলামি শরীয়ত, মারিফত, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দিকে বাঁকা আঙুল তোলে তখন আর বসে থাকতে পারি না। এসবের বুদ্ধিবৃত্তিক জবাব দেওয়ার চেষ্টা করি। নিজের অবস্থান থেকে ডিফেন্ড করি। পারিবারিকভাবে আলেম পরিবারে জন্ম নেওয়ায় প্রকৃত আলেম-উলামাদের প্রতি রয়েছে হৃদয়জাত শ্রদ্ধা। এই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ইসলামের জায়গা থেকেই। এ কারণে প্রায়ই নাস্তিক, মুরতাদ, সংশয়বাদি ও সেকুলারদের সাথে আমাদের প্রচন্ড বিতর্ক করতে হয়। মাঝে মাঝে তাদের গ্যাং অ্যাটাকের শিকার হই। কিন্তু যখন দাড়িতে মেহেদি লাগিয়ে এক মাওলানা সাহেব আরেক মাওলানা সাহেবকে অনলাইনে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন, অমর্যাদা করেন এবং গ্যাং অ্যাটাক করেন তখন খুব কষ্ট পাই। বাইরের লোকের হাসাহাসি দেখে হৃদয় ভেঙে যায়।

এসব ‘হুজুর সেলিব্রেটিদের’ কান্ডকীর্তি নিয়ে আমাকে লিখতে হবে তা কোনদিনও কল্পনা করিনি। নির্দিষ্ট কিছু মাওলানাদের অনলাইনে সেলিব্রেটি বনার খায়েশ গোটা আলেম সমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাদের ইজ্জত-আবরুরের উপর তোহমত উঠছে। একজন আরেকজনকে ছোট করে উপস্থাপন করে সুখ পাচ্ছেন। দলিল পাল্টা-দলিল দিয়ে কুপোকাত করে সিংহ বনে যাওয়ার ভাব করছেন। গত দুই তিন বছর ধরে অনলাইনে ওয়ায়েজ হুজুরদের ঢেউ খেলছে। কোথাকার কোন অজ্ঞাত-অখ্যাত হুজুর ইউটিউভে এসে ইসলাম নিয়ে দুচার কথা কথা বলেই সেলিব্রেটি সাজছেন। আর তাদের নামের পেছনে কতো বাহারি টাইটেলের লেজুর ঝুলছে। নামের ভারে শেষ পর্যন্ত আসল নামটাই নাই হয়ে যাচ্ছে।

এই ‘সেলিব্রেটি হুজুররা’ ফেইসবুক, ইউটিউভে মিডিয়া ট্রায়ালের নামে ইসলাম প্রচারের ‘সম্ভাবনাময়’ অনলাইন ফ্লাটফর্মকে নোংরা করছেন। কতো বাংলা আর হিন্দি গান যে এরা জানেন আল্লাহ মালুম! গায়ক-গায়িকা; নায়ক-নায়িকারা তাদের কাছে ফেল! জীবনে যে গানের নামও শুনিনি, যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ চোখে দেখিনি, ‘ইউটিউভ হুজুরদের’ ওয়াজ শুনতে গিয়ে একসাথে তা শুনা ও দেখা হয়ে গেছে। এ জীবনে আর কোন গান না শুনলেও চলবে! আস্তাগফিরুল্লাহ! লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। এই বুঝি ওয়াজ আর এই বুঝি সেলিব্রেটিগিরি! ছি! এসব দেখে মাঝে মাঝে বলি ‘ধরনী তুমি দ্বিধা হও!…

আলেম উলামাদের মধ্যে এখতেলাফ আগেও ছিল এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এই এখতেলাফ তো রহমত স্বরূপ। মাসয়ালা-মাসায়েলগত এখতেলাফের মাধ্যমে হক ভেসে উঠে। এই এখতেলাফে থাকে দ্বীনের প্রতি দরদ আর ভালবাসা। খনি থেকে স্বর্ণকে তুলে এনে তাকে ঘষামাজা করে যেভাবে খাদমুক্ত করতে হয়, এই এখতেলাফ তো তেমনই। এখন কে কাকে কতোবেশি ভন্ড, বেদাতি, কাফির-মুশরিক বলতে পারেন তার প্রতিযোগিতা চলছে। একদল সহিহ হাদিসের নামে কোন ধরনের তাহকিক ছাড়াই পূর্বেকার দিনের আলেম-উলামাদের ব্যান করে দিচ্ছেন। তাদের নিয়ে মন্দ বলছেন। এগুলো কি দ্বীন বা ইসলাম? নিঃসন্দেহে পূর্ববর্তী হকপন্থী আলেমদের সম্পর্কে বাজে ধারাণা তৈরি করা ও তাদের মান-মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা গুনাহ ও গর্হিত কাজ।

গেল দুই তিন বছর দেখলাম আল আযহার থেকে ডিগ্রি নিয়ে এক মাওলানা দেশে এসে ওয়াজের মাহফিলে মানুষের ভিড় জমালেন। আমরা আশান্বিত হলাম একজন শিক্ষিত, সুন্দর মাওলানা যুবকের দ্বারা হয়তো ইসলামের কিছু খেদমত হবে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখলাম তিনি কমপ্লিকেটেড বিষয় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে নতুন ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে ফেলেছেন। কি সব আজগুবি ফতোয়াও! ব্যাস! আর যায় কই! বাকি সেলিব্রেটিরা রে রে করে তেড়ে এসে তাকে গ্যাং অ্যাটাক শুরু করে দিলেন। তারপর তাঁর ক্ষমা চাওয়া দেখে ভাবছিলাম এবার লোক ক্ষান্ত হবে। আর তিনিও হয়তো শুধরাবেন। কিন্তু না- তিনিও আর শুধরালেন না। তার মধ্যেও সেলিব্রেটির ভূত চেপে বসলো। আরো ক্ষিপ্র গতিতে চললো তাঁর কমপ্লিকেটেড কথাবার্তা। ইসলামের প্রতিষ্ঠিত মাসয়ালা-মাসাঈল নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে আরো এক জটিল সমস্যা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু তিনি যতই বিতর্কিত হন না কেন ইতোমধ্যে কয়েক লক্ষ মানুষের কাছে ‘মহাসেলিব্রেটি’ বনে গেছেন। তাঁরও মায়-মুরিদানগণও এখন মহাসেলিব্রেটি হয়ে মাঠে হাজির। আসলে বাঙালির গলতেও সময় যায় না; পাথর হতেও সময় লাগে না। হায়! কী যাতনা বিষে…

তর্ক বিতর্কের মাধ্যমে সত্যকে খোঁজে বের করার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকা ভালো। এখতেলাফি বিষয়গুলো নিয়ে এরকম বাহাস-মুনাজারা আগেকার আলেমদের মধ্যেও ছিল। কিন্তু এই বাহাস মুনাজারায় প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা ছিলো। ছিল আদব-কায়দার বালাই। ছাত্রের প্রতি উস্তাদের স্নেহকাতরতা; উস্তাদের প্রতি ছাত্রের পিতৃভক্তি। আলেমের প্রতি আলেমের আস্তা-বিশ্বাস ছিলো প্রগাঢ়। বিতর্কিত বিষয় নিয়ে তারাও বই পুস্তক লিখেছেন। একে অন্যের ভুল ধরে জবাব দিয়েছেন। কাউকে না কাউকে তারা মুরব্বি হিসাবে গ্রহণ করতেন। আলাপ-আলোচনার বা মুনাজারার জন্য সুন্দর পরিবেশ বেছে নিতেন। কিন্তু এখন উদ্দেশ্য-বিধেয় ও পদ্ধতি সবই বিগড়ে গেছে। অভিভাবকহীন নেট দুনিয়ায় এখন ভাসান পানির মতো ভাসছেন হুজুররা। এখতেলাফি বিষয় নিয়ে যাচ্ছে তাই ফতোয়াবাজি, মুখবাজি চলছে তো চলছেই। এ বিষয়গুলো সমাধানের জন্য তাদের কোন মুরব্বি নেই। রায় দেন এই এখতেলাফি হুজুরদের সেলিব্রেটি ভক্তরা। আর এই কদর্য মুনাজারা শুনেন ধর্মবর্ণ নির্বিশেষ সকল মানুষ। তারা ইসলাম বুঝতে এসে ‘হুজুরে হুজুরে’ হাঁটু কামড়া-কামড়ি দেখছেন। বেশ উপভোগ্য বিয়য় এগুলো তাই না! প্রিয় ‘সেলিব্রেটি হুজুররা’! হ্যাঁ- আপনারা পারেন বটে।

অফ পিক আওয়ারে এই ‘সেলিব্রেটি হুজুররা’ মুখবাজি আর গলাবাজির করে মার্কেটে চহিদা তৈরি করেন। ফুল মুভি বাজারে আসার আগে যেমন তার ট্রেইলর আসে। আরো খারাপ বিষয় হচ্ছে এক বক্তা আরেক বক্তাকে নাতিপুতি নিয়ে গ্যাং অ্যাটাক করে বেইজ্জত-বেহুরমত করে ছাড়ছেন। কার ইলিম কতটুকু, কে কোথায় পড়াশুনা করছেন তার নির্লজ্জ বয়ান ঝাড়ছেন। ইদানিং পিরের বাড়িতে পশু কোরবানি দেওয়া যাবে কি না এনিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। এখানে কিছু হক দরবার ও মসলককে জড়িয়েও বক্তব্য আসছে। অথচ এ সমস্থ দরবার এইসব বিতর্কের অনেক উর্ধ্বে। নিজের চামড়া বাঁচাতে এইসব বক্তারা একেক সময় একেক দরবার ও মসলকে ভিড়েন। পায়ের তলার মাটি শক্ত হয়ে গেলে আর থোড়াই কেয়ার করেন। কোন কথা বললে একটি মসলককে হেয় করা হয় এমন কান্ডজ্ঞান না থাকলে মস্তবড় আল্লামা হয়েই বা কি লাভ? এছাড়া এক বক্তা অপর বক্তাকে ‘ওরে বাটফার’, ‘ওরে চিটার’, জাহিল, মূর্খ বলে এহানতি করছেন। বিকৃত করা হচ্ছে ব্যক্তির নাম, লকব ও পরিভাষাকেও। ‘এতায়াতি’কে বলা হচ্ছে হাতাহাতি, ‘জিহাদি’কে ফাসাদি, ‘আব্বাসী’কে গাবগাছি, ‘হুদা’কে বেহুদা ইত্যাদি। ইলিম মানুষকে বিনয়ী ও ধৈর্যশীল বানায়। কিন্তু এই সেলিব্রেটি মাওলানাদের মধ্যে এর বালাই নেই। মুরশিদের প্রতি মুরিদের আদব, পির-বুযুর্গদের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, সম্মান ও মর্যাদা তো এমনি এমনি আসে না। এর জন্য সহবত লাগে। কিন্তু এরা চূড়ান্ত পর্যায়ের আত্মম্ভরি। ভেতরে সেলিব্রেটি অহংকার। ভার্চুয়াল আলোচনায় না তারা আদব রক্ষা করতে পারেন না মাঠের বয়ানে। মুখে বিষের তীর নিয়ে ঘুরের এরা। সেলিব্রেটি জোয়ারে কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক কথাবার্তাতেও লাগামহীন। এতে সার্বিকভাবে ক্ষতি হচ্ছে ইসলাম ও মুসলমানের। ইসলাম বিরুদ্ধে ওরিয়েন্টালিস্টদের প্রচার প্রোগান্ডা এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি ও উপনিবেশের মাধ্যমে আমাদের ঘরে ঘরে। এর মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত না করে আমরা নিজেরা নিজেরা ‘বাঁশাবাঁশি’ করে শেষ হয়ে যাচ্ছি।

ঐতিহাসিকভাবে দাওয়াতি ময়দানে ওয়াজ-নসিহত মানুষের ঈমান-আমল ও হুকুম-আহকাম জানতে ও আমল করতে গুরত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। হক্কানী আলেম-উলামা, পির-মাশায়েখরা মাইলের পর মাইল খেয়ে না খেয়ে পায়ে হেঁটে মানুষকে দ্বীনের তালিম দিয়েছেন। ঘরে ঘরে তাবলিগ করেছেন। নিজের পরিবার-পরিজন দরিদ্র অবস্থায় রেখেও তারা দ্বীনি কাজে ত্রুটি করেন নি। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর দাওয়াতে তাবলিগে পার করে দিয়েছেন। হায়! আজকের এই বাজারি আলেমদের অবস্থা যদি পূর্বের আলেমরা একবার দেখতেন তাহলে কতই না লজ্জিত হতেন। কতো প্রতিকূল পরিবেশে ইসলামকে তারা বিজয়ী করেছিলেন।

এখন কোরবানির সময় এলে মুসলমানদের মধ্যে কতো আনন্দ; কতো আয়োজন। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষ সিলেটের শাহ বুরহান উদ্দিন (র.) গরু কোরবানি করার কারণে গৌড় গোবিন্দের নির্দেশে তার শিশুপুত্র গুলজারকে কেটে টুকরো টুকরো করে শহিদ করা হয়েছে। ইসলামের জন্য কতো ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্ত বিসর্জন দিতে হয়েছে তাদের। আমরা সেই ইতিহাস ভুলে গেছি। হযরত শাহজালাল ইয়ামেনি (র.) গৌড় গোবিন্দের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত লড়াই করে সিলেট ভূমি আবাদ করে দিয়েছেন। এই পথ ধরেই আজ আমরা কালেমার অনুসারি। মুজদ্দিদে আলফে সানী সারহেন্দি (র.)-এর মেহনত আর কৌশলে সম্রাট আকবরের ধর্মমত দ্বীনে এলাহির মূলৎপাঠন হয়েছে। দার্শনিক হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী (র.)-এর সংস্কার ইসলামকে অবিকৃত অবস্থায় রেখেছে। হযরত সৈয়দ আহমদ শহিদ বেরলভি (র.) শিরক, বিদয়াতের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার। তার জিহাদ আন্দোলনের ফলে পৃথিবীর বুকে সর্বশেষ একখন্ড খেলাফতি রাষ্ট্র সাময়িক সময়ের জন্য হলেও কায়েম হয়েছিল। নিকট অতীতেও এই বাংলাদেশে ছারছীনার পির ছাহেব, ফুলতলীর পির ছাহেব, বরুণার পির ছাহেব ত্যাগের নজরানা পেশ করে গেছেন। পাহাড়-পর্বত, কাদাপানি, ঝোপজঙ্গল মাড়িয়ে আনাড়ি পথে গিয়ে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। এখন রাস্তা সামান্য ভাঙাচোরা বা কাঁচা হলেই ওয়াইজরা মাহফিল রাখেন না। মাহফিলের তারিখ কনফার্ম করার আগে ওই স্থান পর্যন্ত গাড়ি যাবে কি না তা অবহিত হন। কি অতঃপতন! কি পরিবর্তন তখনের আর এখনের মাওলানাদের মধ্যে।

বছরখানেক আগে সনাতন ধর্মের এক ব্রাহ্মণ ও প্রভাষক সাংবাদিক আমাকে বলেন- ‘ভাই- ইউটিউভে ওয়াজ শুনেন?’ বললাম মাঝে মাঝে শুনি। তিনি বললেন- ‘ইউটিউভে ঢুকলেই হুজুর-মাওলানাদের ওয়াজ সামনে আসে। তাই শুনি। প্রচুর রসিক তারা। অনেক বিনোদন পাওয়া যায়। কি সুন্দর ভিডিওগুলোর ব্যানার হেডিং। ‘অমুক হুজুরের দমফাটা হাসির ওয়াজ’ ‘ঢেলে দেই- চা খাবেন’, ‘অমুককে চরম ধোলাই দিলেন হুজুর’ ইত্যাদি। আমি চুপসে যাই। কারণ তাঁর সাথে আমার দুই একদিন ‘ইসলামে উদারতা ও মানুষের মর্যাদা’ প্রসঙ্গ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। অনেক বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেও ইসলাম যে শান্তির ধর্ম তা মানেন। এই তিনি যখন ইউটিউভের ওয়াজ প্রসঙ্গ নিয়ে এলেন- তখন এইসব ওয়াজিদের নিয়ে ভালো-মন্দ আমাকেও বলতে হয়েছে।

একসময় হুজুর, মাওলানারা রাস্তায় বেরুলে দেখতাম হিন্দু মহিলারা পর্যন্ত মাথায় ঘোমটা টেনে রাস্তার পাশের্^ দাঁড়িয়ে যেতেন। আর এখন হুজুরদের ওয়াজ নিয়ে তরুণ-তরুণীরা ‘খেলা হবে’, ‘আরেকটু ঢেলে দেই’ টিকটক ভিডিও বানায়। এর চেয়ে লজ্জা আর অপমানের কি হতে পারে। কিছু দুনিয়াদার বাজারি বক্তাদের কারণে ওয়াজের মাহফিলগুলো আজ চরম বিতর্কিত। ওয়াজ মাহফিলের প্রকৃত শ্রোতারা আর সেভাবে ওয়াজ শুনতে মাহফিলে যান না। এখন ওয়াজের নতুন শ্রোতা তৈরি হয়েছে। তারা মজা লুটতে ও বিনোদন পেতে মাহফিলে যান। নানান অঙ্গভঙ্গি আর ডায়লগ প্রসব করে শ্রোতাকে ‘হাসাইয়া-কান্দাইয়া’ মারেন। আর শ্রোতা! বাবারে বাবা! যেমন বক্তা তেমনই শ্রোতা! এক ভিডিওতে দেখলাম হুজুর স্টেজে জিকির করছেন আর শ্রোতা জিকিরের তালে তালে স্টেজের বাঁশ বেয়ে উপরে উঠছেন। অপর এক ভিডিওেেত দেখি- স্টেজে করুণ সুর তুলে বয়ান করছেন মাওলানা। এসময় এক ভক্ত আত্মহারা হয়ে স্টেজে লাফ মেরে উঠে মাওলানার সাথে কোস্তাকুস্তি শুরু করে দিয়েছেন। এগুলো চরম পাগলামি। যা ওয়াজের সংস্কৃতির সাথে যায় না।

তাছাড়া ওয়াজ মাহফিলে বড় অংকের হাদিয়া, অগ্রিম প্রদানসহ আছে বহুস্তর বিশিষ্ট মোয়ামালা। এখান থেকেই বোঝা যায় এইসব ওয়াইজ সেলিব্রেটিদের তাকওয়ার অবস্থা কি? আসলে ‘ওয়াইজগিরি’ আর দ্বীনদারিকে আলাদা করে ফেলেছেন এই সেলিব্রেটি বক্তারা। বক্তার তাকওয়া না থাকলে শ্রোতার উপর তার প্রভাব পড়ে না। এজন্যই এতো এতো ওয়াজের পরেও মানুষের মধ্যে তুলনামূলক পরিবর্তন নেই।

তবে আশার কথা হলো- এই সেলিব্রেটিদের বাইরে অনেক তাকওয়াবান আলেম উলামা, পির-মাশায়েখগণ আছেন। যারা এখনো নিজের ছবি তুলতে পর্যন্ত বাঁধা দেন; তাকওয়ার খেলাপ হবে ভেবে। যাদেরকে কেউ হাদিয়া দিলে পাল্টা পকেট থেকে নিজেও হাদিয়া দেন। কথাপ্রসঙ্গে জনৈক এক লন্ডনপ্রবাসী বলেন, আমি একজন আলেমকে জানি যার মাঝে ‘পাইলাম না খানি, পাইলাম না মানি’। এরা আছেন বলেই আমরা এখনো ঈমানে আমলে আছি। আমি নিশ্চিত এই মেকি সেলিব্রেটিরা বেশি দিন ঠিকবেন না। কারণ- ইসলাম ঢঙ তামাশার জায়গা নয়। এটা আল্লাহ প্রদত্ত জীব বিধান। কোন মেকি জিনিস বেশি দিন টিকে না। এখন ইসলাম নিয়ে তরুণ আলেম-উলামারা গভীরভাবে ভাবছেন। জেনারেল শিক্ষিত ইসলাম প্রিয় যুবকরা প্রাচ্যবিদদের জবাবে লড়ছেন। ঢলের কৈ যেভাবে উজায় সেভাবেই জলে ভেসে যায়। এই সেলিব্রেটিরা সেই ঢলের কৈ। পৃথিবীর প্রথম ও শেষ বিপ্লব ইসলাম আবার দিকে দিকে জেগে উঠবেই। ইনশাআল্লাহ!

সালাহ্ উদ্দিন ইবনে শিহাব : সহযোগী সম্পাদক, সাপ্তাহিক পূর্বদিক, মৌলভীবাজার।

প্রচ্ছদ এর আরও খবর
বৃটেনে বার্মিংহাম বইমেলা সম্পন্ন

বৃটেনে বার্মিংহাম বইমেলা সম্পন্ন

মৌলভীবাজারে গরমে রেললাইন বেঁকে সিলেটগামী ট্রেন আটকা (ভিডিওসহ)

মৌলভীবাজারে গরমে রেললাইন বেঁকে সিলেটগামী ট্রেন আটকা (ভিডিওসহ)

মৌলভীবাজারে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত

মৌলভীবাজারে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত

মৌলভীবাজারে ২৪ ঘন্টার পুলিশি অভিযানে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ আটক ৯

মৌলভীবাজারে ২৪ ঘন্টার পুলিশি অভিযানে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ আটক ৯

খোলাচিঠি দিয়ে আয়মান সাদিককে যা বললেন অধ্যাপক মোখতার (ভিডিওসহ)

খোলাচিঠি দিয়ে আয়মান সাদিককে যা বললেন অধ্যাপক মোখতার (ভিডিওসহ)

মজুরি বকেয়া রাখায় ঠিকাদারকে হত্যা 

মজুরি বকেয়া রাখায় ঠিকাদারকে হত্যা 

সর্বশেষ সংবাদ
মৌলভীবাজারে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার 
মৌলভীবাজারে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার 
মৌলভীবাজারে ইলেকশন রিপোর্টিং বিষয়ে ৩ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু
মৌলভীবাজারে ইলেকশন রিপোর্টিং বিষয়ে ৩ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিজাম ইন্তেকাল করেছেন
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিজাম ইন্তেকাল করেছেন
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল নারীর
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল নারীর
কুলাউড়ায় ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সং ঘর্ষে নি হ ত ২, আ হ ত ৩
কুলাউড়ায় ট্রাক-সিএনজির মুখোমুখি সং ঘর্ষে নি হ ত ২, আ হ ত ৩
বৃটেনে বার্মিংহাম বইমেলা সম্পন্ন
বৃটেনে বার্মিংহাম বইমেলা সম্পন্ন
মৌলভীবাজারে গরমে রেললাইন বেঁকে সিলেটগামী ট্রেন আটকা (ভিডিওসহ)
মৌলভীবাজারে গরমে রেললাইন বেঁকে সিলেটগামী ট্রেন আটকা (ভিডিওসহ)
মৌলভীবাজারে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত
মৌলভীবাজারে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত
মৌলভীবাজারে ২৪ ঘন্টার পুলিশি অভিযানে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ আটক ৯
মৌলভীবাজারে ২৪ ঘন্টার পুলিশি অভিযানে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ আটক ৯
খোলাচিঠি দিয়ে আয়মান সাদিককে যা বললেন অধ্যাপক মোখতার (ভিডিওসহ)
খোলাচিঠি দিয়ে আয়মান সাদিককে যা বললেন অধ্যাপক মোখতার (ভিডিওসহ)
মজুরি বকেয়া রাখায় ঠিকাদারকে হত্যা 
মজুরি বকেয়া রাখায় ঠিকাদারকে হত্যা 
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জুড়ী উপজেলা শাখা পুনর্গঠন
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জুড়ী উপজেলা শাখা পুনর্গঠন
অবশেষে চুলা কারখানা থেকে অজগরটিকে উদ্ধার
অবশেষে চুলা কারখানা থেকে অজগরটিকে উদ্ধার
দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি স্কুলের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি স্কুলের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
মৌলভীবাজারে পূজা পরিষদের মানববন্ধন
মৌলভীবাজারে পূজা পরিষদের মানববন্ধন
রাজনগরে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পেলো ৯ হাজার গাছের চারা
রাজনগরে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা পেলো ৯ হাজার গাছের চারা
বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা আহবায়ক রুপক, সদস্য সচিব সুব্রত
বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা আহবায়ক রুপক, সদস্য সচিব সুব্রত
মসজিদ মন্দির এতিমখানার জন্য বরাদ্দ চাল হরিলুট
মসজিদ মন্দির এতিমখানার জন্য বরাদ্দ চাল হরিলুট
জেনে নিন কে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মেজর খালেদুর
জেনে নিন কে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মেজর খালেদুর
ধ্বংস করা হয়েছে আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া ২২৩টি মামলার আলামত
ধ্বংস করা হয়েছে আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া ২২৩টি মামলার আলামত

© 2019 purbodeek.com

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: আলহাজ্ব মো: চন্দন মিয়া, সম্পাদক : মুজাহিদ আহমদ,
প্রকাশক : আলহাজ্ব হাফিজ সাব্বির আহমদ, উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি : মাও. কামরুল ইসলাম,
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: মুহাম্মদ আজির উদ্দিন পাশা, সহযোগী সম্পাদক : সালাহ উদ্দিন ইবনে শিহাব,
সহকারি সম্পাদক: আখতার হোসাইন জাহেদ, মো. রেদওয়ানুল ইসলাম

সম্পাদকীয় কার্যালয়: এম এ রহিম মার্কেট, এম সাইফুর রহমান রোড, মৌলভীবাজার-৩২০০।
ফোন : ০১৭১২ ৭১৬ ২৪৪, ০১৭১৯ ৮৪১ ৮৬৪, ০১৭২৯-৪৩৩৪৬১, ০১৭১০ ৩৮৩৯৫৬,
ই-মেইল: salahuddinpurbodik@gmail.com, purbodik11@gmail.com, purbodik12@gmail.com

Developed by: Web Design & IT Company in Bangladesh

Go to top