মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল
দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকের গাফিলতিতে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ৬:৩৯ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার ::
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকের গাফিলতির কারনে জাকিয়া রেহানা জারা নামে দেড় বছর বয়েসী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের রঘুনন্দনপুর গ্রামের জুনেদ আহমদের শিশু কন্যা জারা’র গত রোববার থেকে জ্বর ও বমি হওয়ায় ডা. জিল্লুল হকের পরামর্শেক্রমে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গত সোমবার বিকেলে ৫টার দিকে ভর্তি করেন।
মৃত শিশুটির বাবা জুনেদ আহমদ মৌখিক অভিযোগ জানান অসুস্থ অবস্থায় শিশুটি মারাত্মক অস্বস্থি শুরু করলে কর্তব্যরত নার্স ও জরুরী বিভাগের চিকিৎসককে বিপদাপন্ন অবস্থা জানিয়ে শিশুরোগ কনসালটেন্টকে ডেকে প্রয়োজনীয় ট্রিটমেন্ট দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা ডাক্তারকেও জানাননি কিংবা কর্তব্যরত চিকিৎসক বা নার্স কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে আয়াকে শিশুটির অবস্থা দেখে আসতে বলেন।
ওইদিন রাত ৮টার দিকে ভর্তি হওয়া শিশুর খিচুনি ওঠলে রোগীর অভিভাবক ফের নার্স ও জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হয়ে কোন সহযোগিতা পাননি। এ সময় দায়িত্বরত নার্স মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান রোগীর চাচা ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম জানান। শিশু রোগীর কষ্ট দেখে স্বজনরা উত্তেজিত হলে নার্স চিকিৎসকের কোন পরামর্শ ব্যতিত রাত ৯টার দিকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এর আগেই সে মারা যায় বলে শিশুর বাবা জুনেদ দাবি করেন।
এ বিষয়টি তারা মৌখিকভাবে আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে জানিয়ে লাশ নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। মৃতের অভিভাবক লাশের ময়নাতদন্ত করতে সম্মত না হওয়ায় আবাসিক মেডিকেল অফিসার লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন মারা যাওয়া শিশুর পিতাকে।
ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমদ ফয়সাল জামান জানান, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তাদের অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেওয়া না হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
মৃত শিশুর পিতা জুনেদ আহমদ বলেন, লাশের দাফন সম্পন্ন করতে মঙ্গলবার বিকেল হয়ে গেছে। তাছাড়া মানসিক অবস্থা ভাল না থাকায় আজ বুধবার সকালে ডাক্তার ও নার্সের গাফিলতির কারণে জারার মৃত্যু হয়েছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তাৎক্ষণিক সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিশুর বাবা স্বাভাবিক হওয়ার পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে শুনেছি। এরপর এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়া শুরু হবে।