১ বছরেও খুঁজ মিলেনি সাংবাদিক আবু তাহেরের,শোকে কাতর স্বজনরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ৯:১৫ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদের ছেলে সাংবাদিক আবু তাহের নিখোঁজের ১ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৮ সালের ১৪ জানুয়ারী রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ৮/১০ জন সাদা পোষাকধারী তাকে তুলে নিয়েছিল। এর পর দীর্ঘ ১ বছর পেরিয়ে গেছে,কিন্তু এখনো তার সন্ধান পায়নি পরিবার।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে,সাংবাদিক সম্মেলন,মানববন্ধন,লিফলেট বিতরণ সহ নানা কর্মসূচী পালন করে খুঁজ না পেয়ে শোকে কাতর হয়ে গেছেন আবু তাহেরের পিতা-মাতা ও স্বজনরা। তবে,তারা আশাহত হননি। তাদের বিশ্বাস,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইচ্ছা করলে সাংবাদিক আবু তাহেরকে গুম নামক কারাগার থেকে জীবিত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবে।
অনুসন্ধান ও নিখোঁজ সাংবাদিকের পরিবারের সাথে আলাপে জানা যায়,২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে আবু তাহেরের বাবা ফারুক আহমদ কমিউনিষ্ট পার্টির মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনের দিনে জাল ভোট প্রতিরোধ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণে একজন সাংবাদিক হিসেবে আবু তাহের সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। এর কারণে নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী শপথ নেওয়ার পর তার সমর্থকরা আবু তাহেরের পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছিল। এসময় আবু তাহেরকেও নানারকম ভয়ভীতি দেখানো হয়। তার কিছুদিন পরই (১৪/০১/২০১৮ ইং) নিখোঁজ হন সাংবাদিক আবু তাহের। ছেলের সন্ধান চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারে ধারে ঘুরেন ফারুক আহমদ। পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলন। সহকর্মী ও কমিউনিষ্ট পার্টির কর্মীরা মানবন্ধন ও গণসংযোগ করেছেন। মানববন্ধন,গণসংযোগ সহ গুমের প্রতিবাদে চলমান কর্মসূচীগুলোতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রইউনিয়নের কর্মী,নিখোঁজ সাংবাদিক আবু তাহেরের খালাত ভাই কামরান উদ্দিন। তিনি ছোটকাল থেকেই ফারুক আহমদের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করছেন। আপন খালু ফারুক আহমদ এবং খালাত ভাই আবু তাহেরের অনুপ্রেরণায় তিনিও কমিউনিষ্টের রাজনীতির সাথে জড়িত। আবু তাহের নিখোঁজের পর থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচীতে ব্যাপক সক্রিয় দেখা যাচ্ছে তাকে।
সাংবাদিক আবু তাহের নিখোঁজ বিষয়ে কামরান উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান,প্রতিবাদী লেখনী এবং কন্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য আবু তাহেরকে সম্ভবত গুম করে রাখা হয়েছে। তার সন্ধানের দাবীতে আমরা অনেক কর্মসূচী পালন করছি,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাচ্ছি-কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে খুঁজে বের করতে তেমন তৎপর নয়। আমি এ ব্যাপারে বেশি সোচ্চার ভূমিকা পালন করছি ফলে আমাকেও গুম খুনের ভয় দেখানো হচ্ছে। এ থেকে আমরা অনুমান করছি,আবু তাহেরের গুমের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা-কর্মী এবং র্যাব জড়িত।
নিখোঁজ আবু তাহেরের পিতা ফারুক আহমদ বলেন,’আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে। সে বেঁচে আছে,নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে-আমরা কিছুই জানতে পারছি না। ছেলের শোকে আমরা কাতর। আমাদের ছেলেকে হত্যা করা হলে আমরা অন্তত তার লাশটা দেখতে চাই।