কমলগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা শুরু
প্রকাশিত হয়েছে : ৩ নভেম্বর ২০১৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ ::
পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই কমলগঞ্জে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ফেস্টুন, ব্যানারসহ নানামুখী প্রচারণা শুরু করেছেন। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা পৌর নাগরিকদের মন জয়ের চেষ্টায় তৎপর বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে। আওয়ামী লীগ, বিএনপির একাধিক নেতার পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ও বসে নেই। নিমন্ত্রণ-দাওয়াত বাদ দিচ্ছেন না কেউ।
এখন থেকেই প্রতিটি সামাজিক অনুষ্ঠানে ভিড় করছেন প্রার্থীরা। পাশাপাশি ডিজিটাল পোস্টার, ব্যানার টাঙানো হচ্ছে নির্বাচনী এলাকায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেজ-গ্রুপ খুলে কৌশলী প্রচারণায় নেমেছেন প্রায় সবাই। শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে অনেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি সাধারণ ভোটারের সামনে তুলে ধরছেন। অনেকে ব্যানার ও বিলবোর্ড টাঙিয়ে পৌরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া কামনা করেছেন।
এদিকে দেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে আয়োজনের আইন পাস হওয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে। অনেক প্রার্থী এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছেন বলে জানা গেছে। আবার অনেক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় নিজ নিজ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে লবিং শুরু করেছেন। অনেকেই শীর্ষ নেতাদের কাছে ধরণা দিচ্ছেন বলে ও নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। দলীয় প্রতীকে প্রার্থী মনোনয়ন হওয়াই বিদ্রোহী হওয়ার সুযোগ না থাকায় সব দলের শীর্ষ নেতারা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে।
নেতাদের মতে, এবার তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারের মন জয় করতে মাঠে নেমে পড়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তারা তৃণমূলের কার্যক্রম ঠিক রেখে হাইলেভেলে জোর তদবির ও লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর মধ্যে চমক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন তরুণ সমাজসেবক যুবনেতা জুয়েল আহমদ। পৌর এলাকার এমন কোন সামাজিক অনুষ্ঠান নেই যেখানে তিনি স্ব-শরীরে উপস্থিত হন না। পৌরসভায় মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে নির্বাচনী মাঠে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে ৩ জন এবং বিএনপি থেকে ৩ জন প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সরকারি সিদ্ধান্তে মাঠ পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সমর্থকরা বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও বিএনপি নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এর বিরোধিতা করছেন। অনেকেই মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত শুরুতে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। বৃদ্ধি পাবে মনোনয়ন বাণিজ্য। তারপরও বসে নেই উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে নিজ নিজ দলের শীর্ষ পর্যায়ে লবিং শুরু করেছেন। এ নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। দল থেকে কাকে সমর্থন দেয়া হবে তা নিয়ে তৈরী হয়েছে এক ধরণের অনিশ্চয়তা।
কমলগঞ্জ পৌরসভা ৩০টি গ্রামের সমন্বয়ে ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। মোট ভোটার সংখ্যা ১১হাজার ৬শ’ ৬৮জন। মেয়র পদে লড়াই করতে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু ইব্রাহিম জমসেদ, কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাপ্তাহিক কমলগঞ্জের কাগজ পত্রিকার প্রকাশক মো. জুয়েল আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন, সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাছিন আফরোজ চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, সমাজ সেবক জাকারিয়া হাবিব বিপ¬ব ও পৌর নাগরিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক নজরুল ইসলাম নির্বাচনী মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমান মেয়র আবু ইব্রাহিম জমসেদ উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আবার তাকে মেয়র নির্বাচিত করতে আহবান করছেন। নতুন প্রার্থীদের মধ্যে যুবনেতা জুয়েল আহমেদ মাঠে চমক সৃষ্টি করছেন। তিনি এখন থেকে আওয়ামীলীগের তৃণমুল কর্মীদের সাথে ঘরোয়া বৈঠক করছেন এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে গণ-সংযোগও করতে দেখা গেছে তাঁকে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের কাছে মনোনায়ন পেতে লবিং অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনকে ঘিরে পৌরসভার জনসাধারণের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ তৈরি হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও পৌর এলাকার পাড়া-মহল্ল¬ায়, সভা ও উঠোন বৈঠক করে বেড়াচ্ছেন। বাজারের চায়ের দোকান ও গ্রামের দোকানগুলোতে এখনই গভীর রাত পর্যন্ত কে প্রার্থী হচ্ছেন,কে প্রার্র্থী হলে ভালো হবে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন সাধারণ ভোটাররা। আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা মাঠে নেমেছেন জোরেসোরে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে নামলেও দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।