উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে লবিং করতে ঢাকামূখী প্রার্থীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ অক্টোবর ২০১৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ
আনহার আহমদ সমশাদ :
মৌলভীবাজার-৩ সদর আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং-তদবির করতে ঢাকামূখী হয়েছেন।
২৮ অক্টোবরের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমাদান, ১৪ নভেম্বর বাছাই এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ নভেম্বর। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ডিসেম্বর।
এ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর অনুসারী হিসেবে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ ও পৌর আওয়ামীলীগের (একাংশের) যৌথ উদ্যোগে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভা শহরের শ্রীমঙ্গল রোডের দর্জিরমহলস্থ মন্ত্রীর বাস ভবনস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপ নির্বাচনে তৃণমুল নেতা কর্মীরা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এক মত পোষণ করে প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর স্ত্রী সৈয়দা সায়রা মহসীনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে মন্ত্রীর সমর্থিত একাধিক নেতা নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা ও প্রচারণা করলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এখনও প্রার্থী নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন বলে পরিচিত বাংলাদেশ পুলিশের এডিশন্যাল আইজি সৈয়দ বজলুল করিম (বি-করিম), সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর এম এ রহিম (সিআইপি), সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল মালিক তরফদার সুয়েব (ওরফে ভিপি সুয়েব) দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
লন্ডন প্রবাসী সিআইপি রহিম, ভিপি সুয়েব, সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে শীঘ্রই ঢাকা যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের অপর অংশের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামীলীগ জেলা সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ, জেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি মো. কামাল হোসেন। এছাড়া এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী ফরাসত আলী, সাবেক ছাত্রনেতা লন্ডন প্রবাসী আব্দুল আহাদ চৌধুরী ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংসদে প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পাটির কোন প্রার্থীর দলীয় ঘোষণা বা প্রচারণা এখনও পরিলক্ষিত হয়নি। ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত মহাজোটের শরিক সংগঠন ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নাম ব্যাপক প্রচারণায় রয়েছে। তাদের মধ্যে লন্ডন প্রবাসী এম এ কাইয়ুম তালুকদার ও সোহেল আহমদ প্রার্থী হিসেবে নিজেদের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রায় হাফ ডজনের উপরে নেতারা নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করায় দলের অভ্যন্তরে ও তৃণমূলে কর্মী সমর্থকদের মাঝে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
উপ-নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নির্বাচনে না এলে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মধ্যেই ভোটযুদ্ধ হবে। এক্ষেত্রে দলে বিভাজন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌলভীবাজার-৩ আসনে (সদর ও রাজনগর) ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.সাইফুর রহমান এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে বিজয়ী হন বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী এবং পরবর্তীতে তিনি পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা পান। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী জনপ্রিয় সৈয়দ মহসীন আলী সিঙ্গাপুরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে সমাহিত করা হয়।
উপ-নির্বাচনকেন্দ্রীক মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক অঙ্গন ও প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা ও নানাবিধ বিশ্লেষণ। স্থানীয় রাজনীতি অঙ্গনে প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক আলোচিত জেলা আওয়ামীলীগ নেতা নেছার আহমদ ও কামাল হোসেন এর মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীদের কাছে অনেক কদর রয়েছে। এরা দুজনেই সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপির সমর্থিত হওয়ায় জনপ্রিয় উভয় নেতা গ্রুপের মাঝে কে মনোনয়ন পাবেন এমন আলোচনাও চলছে।