রাজন হত্যা ॥ প্রধান আসামী কামরুল কারাগারে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ অক্টোবর ২০১৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
বহুল আলোচিত সামিউল ইসলাম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামী কামরুল ইসলামকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আদালতে হাজির করার পর সিলেটের মহানগর হাকিম আনোয়ারুল হক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আগামী রোববার এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে আনার পর সিলেটের কতোয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয়।
সৌদিআরব থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় কড়া নিরাপত্তায় তাকে ঢাকা থেকে সড়কপথে সিলেট নিয়ে আসা হয়।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামী কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ করলে সৌদি কতৃপক্ষ তাতে রাজী হয়। আসামী কামরুলকে আনতে গত সোমবার (১২ অক্টোবর) পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত সুপার মাহাবুবুল করিম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার এএফএফ নেজামউদ্দিন সৌদি আরবের রিয়াদে যান।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের শিশু সামিউল ইসলাম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর কালো টি-শার্ট পড়ে লাঠি দিয়ে রাজনকে কামরুলের পেটানোর ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী বিবেকবান মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। দেশজুড়ে শুরু হয় নিন্দার ঝড়।
কিন্তু ঘটনা টের পেয়ে কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে যায়। এঘটনায় সৌদিতে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে তারা কামরুলকে আটক করে। এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস তাকে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এদিকে ঘটনার বিচার ও কামরুলকে ফিরিয়ে আনতে দেশব্যাপী মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হলে বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের মাধ্যমে জারি করে রেড নোটিশ। এঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ২৪ জুলাই জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আলমগীর হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
ঘটনার পর গত ১৬ আগস্ট ১৩জনকে আসামি করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর কামরুলসহ অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ১লা অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
এই হত্যাকা-ের বিচার ইতিমধ্যে সিলেটের আদালতে শুরু হয়ে গত বুধবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত ২৯ জন জবানবন্দি দেয় আদালতে। এপর্যন্ত ১০ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক কামরুল, শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও প্রকাশিত হয়।