লাউয়াছড়ায় উন্মুক্ত রেল লাইন ॥ দুর্ঘটনায় প্রাণহাণির আশঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ৬ অক্টোবর ২০১৫, ৭:৩০ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক রিপোর্ট ::
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বলে পরিচিত। একারণে স্বভাবতই পর্যটকদের আনাগোনা জেলার অন্য পর্যটন এলাকা থেকে একটু বেশি। সরকারও প্রতিবছর মোটা অঙ্কের রাজস্ব পাচ্ছে এখান থেকে।
জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে রয়েছে শ্রীমঙ্গল-সিলেট অরক্ষিত গেট বিহীন রেললাইন। এই লাইন দিয়ে আন্ত:নগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, উপবন এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসসহ মালবাহী ট্রেনগুলো অহরহ চলাচল করছে।
কিন্তু গাছে ঝুলানো সতর্ক সাইনবোর্ড ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় আর কোন ব্যবস্থা নেই। পর্যটকদের অনেকেই রেললাইনের উপর বসে ছবি তোলাসহ গল্প-গুজবে সময় কাটান। অরক্ষিত ও গেটবিহীন এই রেললাইনের উপর বেড়াতে আসা শিশু, মধ্যবয়সী ও টিনএজরা বসে গল্প-গুজবে মেতে ওঠতে দেখা যায়।শুধু তাই নয়, আশঙ্কার কথা হল শিশুরাও এই লাইনে বসে ছুটোছুটি ও খেলা করছে। অসচেনভাবে বা বেখেয়ালজনিত কারণে যেকোন সময় প্রাণহাণির ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
কিন্তু এখানে কর্তব্যরত পর্যটক পুলিশ থাকলেও তাদের গা ছাড়া ভাব। নিজেদের খেয়াল খুশী মতো দায়িত্ব পালন করছেন। ভিআইপি বা ভিভিআইপি কেউ আসলে তাদের দৌড়ঝাঁপ একটু বেড়ে যায়। গণমাধ্যম কর্মী দেখলে দুরত্ব বজায় রেখে চলেন। কথা বলা এড়িয়ে যান। সারাক্ষণ তাদের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে বা চা, আইসক্রিম বিক্রেতাদের আশেপাশেই ঘুরতে দেখা যায়।
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত দেশের একমাত্র জাতীয় উদ্যান এই লাউয়াছড়া। মৌলভীবাজার ফরেস্ট রেঞ্জের আওতাধীন এই ন্যাশনাল পার্ক শুধু যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর তা নয়। বরং দেশে যেটুকু বন এখনো অবশিষ্ট রয়েছে তার মধ্যে আকর্ষণীয়। ১৯২০ সালে ১২৫০ হেক্টর জায়গা জুড়ে প্ল¬্যান্টেশন করে তৈরী বনরাজি এখন ঘন প্রাকৃতিক বনে পরিণত হয়েছে।
এই পার্কে বিরল প্রজাতির পশু-পাখির দেখা মেলাসহ এখন পার্কটি শিক্ষা, গবেষণা, ইকো-ট্যুরিজমসহ ভ্রমণবিলাসীদের চিত্ত বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট হয়ে উঠছে। উদ্যানের বনের ভেতরে রয়েছে তিনটি প্রাকৃতিক ফুট ট্রেইল বা পায়ে হাঁটা পথ। এরমধ্যে একটি ৩ ঘন্টার, একটি ১ ঘন্টার ও অপরটি ৩০ মিনিটের পথ।
আগত পর্যটকরা নগর জীবনের বিষন্নতা ভুলতে এই লাউয়াছড়ায় আসেন। পরিবারের সদস্যসহ স্বজনদের সাথে নিয়ে প্রকৃতির সাথে সকাল-সন্ধ্যা কাটান। সব সময় পশু-পাখি না দেখলেও ঠান্ডা হিমেল বাতাস ও একটু বৃষ্টির দেখাতেই পরম আনন্দ পেয়ে থাকেন।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বনবিট কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম জানান, সুরক্ষার জন্য এখানে একটি গেট স্থাপনের আবেদন করা হলেও কোন সুফল মিলছে না।