শায়খুল হাদিস আল্লামা হবিবুর রহমান
আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহর আন্দোলনের ফসল ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত হয়েছে : ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন আনজুমানে আল ইসলাহর স্থায়ী কমিটির সদস্য শায়খুল হাদীস আল্লামা হবিবুর রহমান, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রূহুল আমিন খান ও সিলসিলা ইসলামিক সোসাইটি কভেন্ট্রি ইউকের পরিচালক ও তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আলহাজ হাফিয সাব্বির আহমদ।
পৃথক বিবৃতিতে শায়খুল হাদিস আল্লামা হবিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের ফসল ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়। মাদরাসা শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার সাথে মিশিয়ে যখন এ শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা নষ্ট করার যড়যন্ত্র চলছিল তখন এদেশের ইসলামি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বৃহৎ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। সর্বশেষে এ শিক্ষার স্বকীয়তা বজায় রাখার স্বার্থে শতবছরের বয়োবৃদ্ধ আল্লাহর ওলি হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) লং মার্চের ডাক দেন। তাঁর এই কুরবানীর বদৌলতেই আজকের এই আরবী বিশ্ববিদ্যালয় । এর পেছনে জমিয়তুল মোদাররেছীনের অনেক শ্রম রয়েছে। রয়েছে আলেম উলামাদের আত্মত্যাগ। সর্বোপরি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ সাহেবের ঐকান্তিক চেষ্টায় আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহি সম্পাদক, মাওলানা কবি রূহুল আমিন খান বলেন, দীর্ঘ কয়েকযুগ ধরে স্বতন্ত্র আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল এদেশের আলেম-উলামা ও পীর মাশায়েক ও মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকের । এর জন্য স্বপ্ন দেখে গেছেন জমিয়তুল মোদাররেছীনের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এম মান্নানসহ বুযুর্গানে দ্বীনেরা ।
বিগত বিএনপি সরকারের আমলে যখন মাদরাসা শিক্ষার ফাযিল ও কামিলকে সাধারণ শিক্ষার সাথে একাকার করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল তখনই হুংকার দিয়ে উঠেন ইসলামি আন্দোলনের কর্মীরা । বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ফুলতলী পীর সাহেব কেবলার নাতি মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ইসলামি ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ‘ইসলামি ছাত্র ঐক্য’ গঠন করে দেশের প্রতিটি বিভাগে সভা সমাবেশ করে আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। অন্যদিকে জমিয়তুল মোদাররেছীনের সভাপতি দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দিনও তৎপর হয়ে উঠেন। তিনিও সারাদেশে জমিয়তুল মোদাররেছীন এর কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আল্লাহর ওলি ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী সিলেট থেকে ঢাকায় লং মার্চ করেন। আজ ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যতোদিন ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে ততোদিন আল্লাহর এ মকবুল ওলির কথা স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে । উঠে আসবে তার ঐতিহাসিক লং মার্চের কথা।
সিলসিলা ইসলামিক সোসাইটি কভেন্ট্রি, ইউকের পরিচালক ও ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে গঠিত তৎকালীন ইসলামি ছাত্র ঐক্যের সিলেট বিভাগীয় আহবায়ক আলহাজ হাফিয সাব্বির আহমদ বলেন, ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সবচেয়ে বেশি ত্যাগের নজরানা পেশ করেছেন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ । মাদরাসা শিক্ষাকে বাঁচাতে বৃদ্ধ বয়সে সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করে তৎকালীন বিএনপি সরকারের কাছে আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছিলেন । তার সুযোগ্য ছোট সাহেবজাদা আনজুমানে আল ইসলাহর বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী লং মার্চ কর্মসূচি পরিচালনার মূল দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর নাতী তৎকালীন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে সমমনা সকল ইসলামি সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ‘ইসলামি ছাত্র ঐক্য’ গঠন করে ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। যখন ছাত্র ঐক্যের সকল কর্মসূচি শেষ হয়ে আসে তখন বৃদ্ধ বয়সে আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (র.)-এর নেতৃত্বে কয়েক হাজার মুরিদীন, মুহিব্বীন, তালামীযে ইসলামিয়া ও আনজুমানে আল ইসলাহর নেতাকর্মীর নিয়ে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি পালন করেন। তার এই আন্দোলনের গতিবেগে ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি সারাদেশের মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক ও অনুরাগীদের মধ্যে জোরদার হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই আন্দোলনের ফসলই আজকের ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়।