ডিএনএ প্রোগ্রামিং হয়ে ওঠবে মানব সভ্যতার বিস্ময়
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুন ২০১৫, ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক ::
রোগাক্রান্ত বা দুর্ঘটনার মুখোমুখি না হলে একটি প্রাণী কেন মারা যায় সে নিয়ে বহু বছর ধরেই গবেষণা করে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের বয়স বাড়তে বাড়তে এমন একটি সময় আসে যখন আমাদের নতুন দেহকোষ তৈরি বা রেপ্লিকেটিং এর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পরই মানুষ বুড়িয়ে যেতে থাকে এবং এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
পৃথিবীর প্রাণিবৈচিত্র্যে লক্ষ্য করা যায় বেশ কিছু প্রাণী আছে যেগুলো ২০০ থেকে ৩০০ বছর অবলীলায় বেঁচে থাকতে পারে। মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির স্বপ্ন এখান থেকেই খুঁজে ফেরেন অনেকে। তাদেরই একজন লিওনার্ড হ্যাভফ্লিক। এই বিজ্ঞানী বের করেন, নতুন কোষ তৈরি মোটামুটি ৫০ বার রেপ্লিকেটিং এর পর প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়। আর এর পর ধীরে ধীরে কোষ ক্ষয় হতে হতে আমাদের মৃত্যু হয়। মানুষের শরীর এমনভাবে তৈরি যে জৈবিকভাবেই তা মৃত্যু জন্য প্রোগ্রাম করা। এখান থেকেই বিজ্ঞানীরা নতুন কোষ নতুনভাবে প্রোগ্রাম করা সম্ভব কিনা সে পথ খুঁজতে শুরু করেন। এর মাধ্যমে বার্ধক্যজনিত মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হবে।
ইঁদুর ও কেঁচোর ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা যায়, জেনেটিক কোড পরিবর্তনের মাধ্যমে আয়ু বৃদ্ধি সম্ভব। শরীরে বিশেষ কিছু জিন আছে যারা আমাদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে, কিছু জিন আছে যারা স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।
মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়ার পর যদি এসব বৃদ্ধি সংক্রান্ত জিন থেকে স্বাস্থ্য বজায় রাখার জিনের দিকে শক্তি দেওয়া যায়, তাহলে আয়ু বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া সম্ভব। আয়ু নিয়ে গবেষণা করাটা অনেক সময়সাপেক্ষ। যতদিন না ডিএনএ প্রোগ্রামিং করে বার্ধক্যজনিত মৃত্যু বন্ধ করা যাচ্ছে ততদিন অমরত্বের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। একুশ শতকে বিজ্ঞানের বহু অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। ডিএনএ প্রোগ্রামিং করার ধারণার বাস্তবায়ন শুরু হলে সেটি হতে যাচ্ছে এ সভ্যতার সবচেয়ে বড় বিস্ময়।
আর কয়েক বছরের মধ্যেই ডিএনএ প্রোগ্রামিং এর চেষ্টা করা হবে।