আগামী বাজেটও বহাল থাকছে সিম ট্যাক্স
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০১৫, ৮:২৯ পূর্বাহ্ণ
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক ::
আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেলফোনের সিম কার্ডের ওপর ধার্যকৃত কর বহাল থাকছে। বর্তমানে প্রতিটি সিমের ওপর ৩০০ টাকা কর ধার্য রয়েছে, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
মূলত সেলফোন অপারেটররা সিম বিক্রির সময় গ্রাহকের কাছ থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করে এবং পরে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়। কিন্তু বাজারে আধিপত্য বিস্তারের মানসে অপারেটরগুলো খুব কম দামে সিম বিক্রি করে। গ্রাহক বাড়ানোর জন্য অনেকটা আগ্রাসীভাবেই তারা এটি করে থাকে। ফলে গ্রাহকের কাছ থেকে করের টাকা নেয়া তো দূরে থাক, সিমের প্রকৃত মূল্যের চেয়েও অনেক সময় কম দামে বাজারে সিম বিক্রি করা হয়। এতে সিমের সহজলভ্যতা বাড়ার পাশাপাশি অব্যবহৃত সিমের সংখ্যাও বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে সিম ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে সেলফোন অপারেটররা। গত মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়েও এ দাবি উত্থাপন করে সেলফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)। তাদের দাবি, বর্তমানে সচল সিম কার্ডের সংখ্যা ১২ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার। পেনিট্রেশন হার ৭৬ শতাংশ। কিন্তু একজন গ্রাহকের একাধিক অপারেটরের সিম কার্ড থাকায় বর্তমানে সেলফোন ব্যবহারকারী প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৯০ লাখ। এক্ষেত্রে পেনিট্রেশন হার ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ এখনো অনেক মানুষ সেলফোন সেবার বাইরে রয়েছেন। সিমের কর প্রত্যাহার করা হলে গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে বলে দাবি করে অ্যামটব।
তবে তাদের এ দাবির সঙ্গে একমত নয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা। কারণ সিম ট্যাক্স প্রত্যাহার করা হলে তাতে গ্রাহকের কোনো লাভ হবে না। বরং কম খরচে সিম বিক্রির সুযোগে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা আরো বেড়ে যাবে। তাই সিম ট্যাক্স বহাল রাখা যুক্তিযুক্ত মনে করছে সরকার।
বর্তমানে দেশে সব অপারেটরের মোট সিমের সংখ্যা ১২ কোটি ২৬ লাখ ৬৮ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ৪২ শতাংশ, বাংলালিংকের ২৬, রবির ২২, এয়ারটেলের ৬, টেলিটকের ৩ ও সিটিসেলের ১ শতাংশ। বর্তমানে একটি সিম ও রিম কার্ডের বিপরীতে ১০৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ মূল্যসংযোজন কর এবং ১৯০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হয়। এতে সিমপ্রতি মোট করের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০০ টাকা। আগে প্রতিটি সিমের ট্যাক্স ছিল ৮০০ টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে তা ২০০ টাকা কমিয়ে ৬০০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। পরে আরেক দফা এ কর কমিয়ে ৩০০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
সেলফোন অপারেটরদের সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকরা প্রতিটি সিম কিনছেন ১০০-১৫০ টাকায়। বাকি টাকা এবং এর ওপর প্রযোজ্য ভ্যাট গ্রাহকদের পক্ষ থেকে সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছে অপারেটররা।
এদিকে সিমট্যাক্স উঠিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সেলফোন অপারেটরদের যে করপোরেট কর দিতে হয়, সেটিও কমানোর দাবি জানিয়েছিল অ্যামটব। তবে এ কর আগের হারেই বহাল থাকবে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সেলফোন অপারেটরদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত করপোরেট কর আরোপিত আছে। এটি ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছিল অপারেটররা।