মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে তালিকা হচ্ছে
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০১৫, ২:০০ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশে আটক হওয়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা দেবে ।
এ সংস্থার ঢাকা কার্যালয়ের মুখপাত্র আসিফ মুনীর গতকাল মঙ্গলবার জানান, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ পেয়ে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে আইওএম।
তিনি জানান, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় আটক বাংলাদেশিদের তালিকা তৈরিতে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে ওই তিন দেশে দুই থেকে তিন হাজার বাংলাদেশি আটক হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এলেও এর সঙ্গে একমত নন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে না পারলেও মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “সাগরে ভাসমান সবাই বাংলাদেশি নয়। বাংলাদেশি থাকলেও সংখ্যায় তারা অল্প।”
তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে যারা পাচারকারীদের নৌকায় করে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা থাইল্যান্ডে ভিড়তে পেরেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১৪ শ’ বাংলাদেশি ছিলেন।
মিয়ানমারে নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছর ধরে বাঁচার আশায় সাগর পাড়ি দিয়ে আশেপাশের দেশ, বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টায় আছেন। আর বাংলাদেশ থেকেও নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। মানবপাচারকারীরা এ সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে।
গতমাসের শেষে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের পরিত্যক্ত এক ক্যাম্পে অভিবাসীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
থাই পুলিশ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করায় এবং মালয়েশীয় ও ইন্দোনেশীয় নৌবাহিনী কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পাচারকারীদের আরও বহু নৌকা সাগরে আটকে আছে বলে শঙ্কা তৈরি হয়। এতে অন্তত ৮ হাজার মানুষ সাগরে আটকা পড়েন বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ধারণা।
গত কয়েক দিনে ওই তিন দেশের নৌবাহিনী মানুষবোঝাই বেশ কিছু নৌকা উপকূলে ভিড়তে না দিয়ে গভীর সাগরে ঠেলে দেয়, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন ‘পুশ ব্যাক’ বন্ধ করে সাগরে বিপদগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার এবং তাদের জন্য বন্দর খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন ।
আইওএম মুখপাত্র আসিফ মুনীর বলেন, আটকেপড়াদের যে তালিকা হচ্ছে তা বাংলাদেশেও পাঠানো হবে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে আইওএম বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা দেবে।
লিবিয়া সঙ্কটের পর শরণার্থীদের সহায়তা দিতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব ছিল। এই তহবিল থেকে ১০ লাখ ডলার আটকেপড়াদের ফেরাতে ও তাৎক্ষণিক সেবা এবং আইনগত সহায়তা দিতে ব্যয় করার কথা ভাবা হচ্ছে।