পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণে ২০ জন আহত
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০১৫, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনায় একটি ট্রেনে দুই যাত্রীর মধ্যে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাদের একজনের সঙ্গে থাকা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে শিলাইদহ থেকে কৃষ্ণনগরগামী একটি লোকাল ট্রেন তিতাগড় পার হওয়ার কিছু পরে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে। খবর আনন্দবাজার।
রেলপুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন ভোর ৩টে ২০ নাগাদ শিয়ালদহ থেকে আপ কৃষ্ণনগর লোকালটি ছে়ড়েছিল। সিগন্যালে ত্রুটির জন্য দমদমে কিছু ক্ষণ দাঁড়ানোর পর ট্রেনটি ফের রওনা হয়। ভোর পৌনে চারটে নাগাদ সেটি টিটাগড় পৌঁছয়। সেখান থেকে তিন-চার জন যাত্রী ট্রেনে ওঠেন। প্রাথমিক তদন্তে রেলপুলিশের অনুমান, ওই যাত্রীদের কারও কাছে বোমা ছিল। নিজেদের মধ্যে বচসা বাধায় অসাবধানতাবশত তা কোনও ভাবে ট্রেনের কামরায় পড়ে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়।
ট্রেনটি ব্যারাকপুর পৌঁছলে, যাত্রীরাই রেলকর্মীদের খবর দেন। রেলপুলিশ ওই কামরা থেকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে রাজা দাস নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী রয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, তার মাথার একাংশের পাশাপাশি উড়ে গিয়েছে একটি হাতও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, এই রাজার কাছেই বোমা ছিল। তার দুই সঙ্গীও সেই সময় ট্রেনে ছিল। কিন্তু, বিস্ফোরণের পর তারা পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। রেল সূত্রে খবর, এই বিস্ফোরণে মোট ২০ জন আহত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে ছয় জনের আঘাত বেশ গুরুতর।
শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার দেবাশিস বেজ বলেন, ‘‘রাজা ট্রেনে আগে থেকেই ছিল। টিটাগড় থেকে উঠেছিল তার দুই সঙ্গী কানা ভোলা ও বাঁইয়া। তাদের সঙ্গে বচসার পরেই বোমা বিস্ফোরণ হয়। তবে, কার কাছে বোমা ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এই ঘটনার পরেই কানা ভোলা ও বাঁইয়া জখম অবস্থাতেই ট্রেন থেকে লাফিয়ে নেমে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্র জানায়, বোমার ঘায়ে আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন যাত্রী। কয়েক জন যাত্রী আবার আতঙ্কে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। আশপাশের বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ট্রেনের কামরায় থাকা আহত যাত্রীদের প্রথমে ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁদের কয়েক জনকে। গুরুতর আহতদের বি আর সিংহ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় রেলের উদ্যোগে। তাঁদের বিশেষ একটি উদ্ধারকারী ট্রেনে করে শিয়ালদহ নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁদের এক জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিস্ফোরণের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছন পূর্ব রেলের ডিএম আরপি গুপ্ত। তিনি জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। যে ট্রেনে বিস্ফোরণ হয়, সেই রেকটিকে আপাতত ফরেন্সিক তদন্তের জন্য নারকেলডাঙা কারসেডে নিয়ে আসা হয়েছে। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম জয়া বর্মা সিংহ বলেন, ‘‘রেকটির ওই কামরাটি কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তদন্তের সুবিধার্থে সেটিকে কারসেডে নিয়ে আসা হয়েছে।’’ পরে তিনি জানান, ‘‘এই ঘটনায় দু’টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। রেলপুলিশের পাশাপাশি পূর্ব রেল প্রশাসনও খতিয়ে দেখছে ট্রেনের মধ্যে কারা বোমা আনল? কীভাবে সেগুলি ফাটল? এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’