গর্ভফুল কাটার আগেই নবজাতককে রাস্তায় ফেলে গেলেন মা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ এপ্রিল ২০১৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ
আব্দুর রহমান সুহেল, রাজনগর ::
রাতের আঁধারে জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যেই নবজাতকে ফেলে দেয়া হয় সড়কের পাশে। তখনও কাটা হয়নি প্লাসেন্টা (গর্ভ ফুল-নারী)। খোলা আকাশের নিচে সেখানেই চিৎকার করে কাঁদছিল নবজাতকটি। যেন মমতাহীন মায়ের আনাদরেরই জানান দিচ্ছিল। মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের গয়ঘর ব্রিজের পাশে শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে যান ওই সড়কের পাশের মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কাশেম। তিনি শিশুটিকে দেখে ফোন দেন রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুদ্দোহা পিপিএম-এর কাছে। ৮-১০ বছরের কোন শিশু মনে করে ওসি থানার এসআই পাঠান ঘটনাস্থলে। ঘাসের মধ্যে ফেলা রাখা শিশুটির অবস্থা জেনে নিজেরে চেয়ারের তোয়ালে নিয়ে দৌড়ে যান ওসি। তখন রাত সাড়ে ১০টা। নবজাতকটিকে উদ্ধার করে ওসি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম ও সেবিকা নাজমা বেগম শিশুটির নারী কাটা, উষ্ণতা দেয়াসহ প্রাথমিক চিকৎসা দেন। মোটামোটি সুস্থই ছিল শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ নীল বর্ণ ধারণ করায় চিকিৎসকের পরামর্শে নবজাতকটিকে নিয়ে ভর্তি করেন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে। ঘটনাটি গত মঙ্গলবার রাতের।
বুধবার রাত ৮টার সময় রাজনগর থানার ওসি মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম রাজনগর থানায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এ বিষয়টি জানান।
ওসি আরো জানান, শিশুটিকে উদ্ধারের পরপরই তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এবিষয়ে তাদের পূর্ণ সমর্থন ও এটিকে ব্যক্তিগতভাবে না দেখে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেখান জন্য বলেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এব্যাপারে তাকে উৎসাহও দিচ্ছেন। রাজনগর থানার পুলিশের তত্ত্বাবধানে থাকা শিশুটি বর্তমানে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দেখাশুনার জন্য একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন নিয়মিত। পুলিশ ও শিশু কল্যাণ সংস্থার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় শিশু খাদ্য দেয়া হচ্ছে।
ওসি মো. শামছুদ্দোহা বলেন, এই শিশুটিকে নেয়ার জন্য প্রচুর ফোন আসছে। তবে তিনি চান সে বড় হয়ে জীবনে যাতে কোন লাঞ্ছনা সইতে না হয় এ ধরনের কাউকে হস্থান্তরের। এ জন্য উপজেলার ৮ ইউপি চেয়ারম্যান এবং সাংবাদিক নিয়ে বসে হস্তান্তরের বিষয়ে চিন্তা করবো।
বুধবার রাতে রাজনগর থানায় ওসির সঙ্গে মতবিনিময় কালে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম সরওয়ার, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, আউয়াল কালাম বেগ, আব্দুর রহমান সোহেল, শংকর দুলাল দেব, সৈয়দ বয়তুল আলী, আহমেদ ফয়ছল আজাদ, ফরহাদ হোসেন, সৈয়দ ফুয়াদ হোসেন, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।