মৌলভীবাজারে হাওরে হাওরে চলছে ধান কাটা উৎসব
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০১৫, ৭:২২ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক রিপোর্ট ::
মৌলভীবাজারের হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধান এখন মাঠে মাঠে। ধান কাটা শুরু হয়েছে সপ্তাখানেক আগেই। কিষাণ-কিষাণীদের এখন দম ফেলার সময় নেই। ধান কাটার ধুম পড়েছে। হাওর এলাকায় সর্বত্রই ধান কাটার আমেজ। কৃষকরা ধান কাটছে। মাড়াই দিচ্ছে। এ যেন এক মহোৎসব এ অঞ্চলের কৃষকদের।
তবে জেলার কাউদিঘির হাওরের রাজনগর অংশের মুন্সিবাজার, ফতেপুর, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের কৃষকের আনন্দ যেন হঠাৎ থমকে গেছে। দিন পনের আগে শিলাবৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে তাদের আনন্দ। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপরও কৃষকরা যেভাবেই পারছেন ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র সম্পদ হাওর। এখানকার মানুষের নির্ভরশীলতা হাওরের ফসলের উপর। সারা বছরের খোরাকী এবং সকল ব্যয় চলে ধান দিয়ে। কৃষকরা ধার দেনাও মিটান ধান বিক্রি করে।
সরজমিনে হাকালুকি হাওরে গেলে কথা হয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে, কথা হয় ধান কাটা কামলাদের সাথে। সদর উপজেলার একাটুনা ইউপি’র বুড়িকোনা বর্গাচাষী কিরণ বিশ্বাস (৩৫) বলেন, তিনি ২৫ কিয়ার জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি সাড়ে তিনশ মণ ধান পাবো।
কিরণ বিশ্বান আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজ, সারের ব্যাপারে কোন সহযোগিতা পাইনি। কৃষিব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করলে ছোট কৃষকদের অনেক সুবিধা হতো। সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় আমাদের এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়েছে। এই ঋণ পরিশোধ ও কামলা খরচ নির্বাহ করতে আমাদের কাঁচা ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। ধান পরিবহনের জন্য ভাল কোনো রাস্তা না থাকায় ধান মাড়াই করে ঘরে পৌঁছাতে তাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয়ও খুব বেড়ে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, জেলায় রয়েছে ছয়টি হাওর ।
হাওরগুলোর মধ্যে এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৃহত্তর হাওর হাকালুকি হাওরে ২৭২৮৩ হেক্টর, হাইল হাওরে ১১৬০০হেক্টর, কাউয়াদিঘী হাওরে ৬৪০০ হেক্টর, বড় হাওরে ২০০০ হেক্টর, কেওলা হাওরে ৪০০হেক্টর, করাইয়া হাওরে ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষ করা হয়েছের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবীদ আবুল কালাম চৌধরী বলেন, এ বছর তাদের বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৮৮৭হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৫১৪৮৮ হেক্টর। রাজনগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ৪০০ হেক্টর জমির ধান গত ( ৯ এপ্রিল) শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাজে শীঘ্রই বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বছর সরকার ৮৮০ টাকা মণ দরে ধান সংগ্রহ করবে। এবং এই ধান সংগ্রহ কার্যক্রম খুব দ্রুতই শুরু করা হবে।