আজ আন্তর্জাতিক যক্ষ্মা দিবস
২০৩৫ সালের মধ্যে যক্ষা নির্মূলের পরিকল্পনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মার্চ ২০১৫, ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ
হেলথ ডেস্ক ::
বিশ্বে প্রতিবছর ৯০ লাখ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। মারা যাচ্ছে ১৫ লাখ। প্রতি সেকেন্ডে প্রাণ হারাচ্ছে একজনেরও বেশি। এই চিত্র বলে দেয় যক্ষ্মায় প্রাণহানি ঘটেই চলেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে যক্ষ্মা রোগকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক যক্ষ্মা দিবস।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্যমতে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ৪০২ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত। আর যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হচ্ছে প্রতি লাখে ৫১ জনের।
ব্র্যাকের যক্ষ্মা কর্মসূচির তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে দেশে এক লাখ ৯১ হাজার ১৫৫ জন যক্ষ্মার নতুন রোগী শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে শিশু ছিল ছয় হাজার ৩১৮ জন।
চলতি বছর বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘যক্ষ্মা খুঁজব ঘরে ঘরে, সুস্থ করব চিকিৎসা করে।’ এই প্রতিপাদ্যের লক্ষ্য চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত বিশ্বের ৩০ লাখ যক্ষ্মা রোগীর সেবা নিশ্চিত করা।
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যক্ষ্মায় ৯৫ শতাংশেরও বেশি প্রাণহানি ঘটে। যক্ষ্মার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুর শীর্ষস্থানীয় তিনটি কারণের মধ্যে যক্ষ্মা রয়েছে।
ব্র্যাক-এর টিবি ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক ডা. আকরামুল ইসলাম জানান, অ-শনাক্ত থেকে যাওয়া রোগীরা অকালে অনেকেই মৃত্যু বরণ করেন। সেবা নিতে না আসা রোগীরা বরাবরই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থেকে যান। তবে অনেক রোগী বেসরকারি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে সেবা নিচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, এসব রোগীদের চিন্তিত করেও তাদের সেবার আওতায় আনা প্রয়োজন।
দরিদ্র হওয়ার কারণে যক্ষ্মা রোগীর চিকিৎসা সেবা যেন ব্যহত না হয়, সেজন্য বিশেষ প্রকল্প নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে রোগীর চিকিৎসা ব্যয়সহ যাতায়াত খরচও তারা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
২০১৬ সাল থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্ব থেকে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি কতটা সহজ হবে, এমন প্রশ্নে ডা: ইসলাম বলেন, যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বনের সব পরিকল্পনাই নিয়েছেন তারা।
এজন্য আনা হয়েছে অত্যাধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতিও।
তবে, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থাই যক্ষ্মার মূল কারণ উল্লেখ করে ডা. ইসলাম বলেন, তিনি মনে করেন দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে।
তাই ২০৩৫ সালের মধ্যে তারা যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারবেন বলেই তাদের বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে কিছুদিন আগেও ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার (এমডিআর-টিবি) সন্দেহভাজন রোগীর কফ পরীক্ষার জন্য ইউরোপে পাঠানো হতো। পরীক্ষা শেষে ফল হাতে নিয়ে রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে চার মাস লাগত। এখন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরীক্ষার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের যক্ষ্মা শনাক্ত করা যাচ্ছে। বর্তমানে ৩৯টি সরকারি হাসপাতালে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।