হাতির জন্য নিজের শেষ ধানী জমি উৎসর্গ করলেন কৃষক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মার্চ ২০১৫, ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
শ্রীলংকার এক ৭৫ বছরের হাতি-প্রেমিক বৃদ্ধ তার নিজের মালিকানাধীন শেষ ধানী জমিটুকু এক বৌদ্ধমন্দিরকে দান করেছেন।
শর্ত একটাই, ওই আধা একর জমির উৎপাদিত ধান যেন শুধু হাতির খাওযার জন্যই রেখে দেয়া হয়। ওই মন্দিরের হাতি, বা বন্য হাতি – সবার জন্যই এই জমি উন্মুক্ত থাকবে।
যদিও হেরাথ মুদিয়ানসেলাগে ধর্মসেনা নামে এই দরিদ্র কৃষকের আট সন্তানের একটি বন্য হাতির আক্রমণেই মারা গেছে – তবু হাতির জন্য তার ভালোবাসা কমে নি।
মধ্য শ্রীলংকার গেদিগাসওয়ালানা গ্রামে এই জমির দলিল ‘হস্তান্তর’ হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিল সেই বৌদ্ধমন্দিরের দুটি হাতি, এবং অনুষ্ঠানের পর তাদেরকে মি. ধর্মসেনার জমির ধান খেতে দেয়া হয়।
একজন সাংবাদিক – যিনি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বলেন – সে সময় উপস্থিত অনেক চাষীর চোথে তিনি জল দেখেছেন।
ওই এলাকায় এধরনের ঘটনা বিরল। কারণ যদিও স্থানীয় বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে হাতির জন্য একটা বিশেষ সদয় অনুভুতি লোকের মনে কাজ করে – কিন্তু তার পরও মানুষ ও হাতির বৈরিতা খুবই সাধারণ ঘটনা।
অনেক চাষীকেই নিয়মিত হাতি তাড়াতে হয়, তাদের ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে।
তার ওপর ধর্মসেনার আট সন্তানের মধ্যে একটি – ২০ বছরের এক পুত্র সন্তান – এক বন্য হাতির আক্রমণেই মারা যায়।
সেই বন্য হাতিটি তার ছেলেকে শুঁড়ে পেচিয়ে জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়।
পরে জঙ্গলের মধ্যে তার পিষ্ট মৃতদেহ পাওয়া যায়।
কিন্তু মানসিক আঘাতের পরেও ধর্মসেনা হাতির প্রতি ভালোবাসা হারান নি। তার কথা, বুদ্ধের শিক্ষাই হলো শত্রুকেও ভালোবাসতে হবে।
ধর্মসেনার এক ছেলে উপতিসা বলছিলেন, তার বাবা যখন হাতির জন্য ধানী জমি উৎসর্গের কথা তাদের বললেন, তখন তারা কেউই এতে আপত্তি করেননি।