শওকত আলীর বাউকুল বরই চাষে সাফল্য
প্রকাশিত হয়েছে : ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন ::
মনুনদীর পাশে চরের জমিতে গত দুই বছরে বাউকুল বরই চাষ করে সাফল্যে এখন কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের শওকত আলী। তার এ চাষ দেখে এলাকার অনেকেই বাউকুল বরই চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।
এ বছরের প্রথম মৌসুমে শওকত আলী ৫০লাখ টাকার বাউকুল বরই বিক্রির আশা করছেন।
সরজমনি গিয়ে দেখা যায়, সাধারণত বাউকুল বরই পাহাড়ি এলাকায় জন্মায়। নদীর চরে সমতল জমিতে সেই বাউকুল বরই চাষ করে সাফল্য এনেছেন কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের শওকত আলী। তিনি ২০১৩ সালে দুবাই থেকে দেশে চলে এসে তার খালু ছাদ মিয়ার নিজের নদীর ধারের চরের জমি লিজ নিয়ে বাউকুল বরই চাষ করেন। কুল বরই বিক্রি করে লাভের মুখ দেখায় শওকত আলী নিজেই ২০১২ সালে দুই একর জমিতে বাউকুল বরই বাগান গড়ে তোলেন। বাগানে ২ লাখ টাকা ব্যয় করে প্রায় ৫ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেন। প্রথমবার বরই চাষে লাভের মুখ দেখায় তিনি আরো উৎসাহিত হয়ে উঠেন। ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বার প্রায় ৫ একর জায়গায় মধ্যে ২ হাজার বরই গাছ নিয়ে বাগান গড়ে তোলেন। শওকত আলী নিজে ও দৈনিক ৮জন শ্রমিক গাছের পরিচর্যাসহ বাউকুল বরই সংগ্রহ করছেন। দৈনিক গাছ থেকে প্রায় ১টন বরই সংগ্রহ করে কেজি ২০ থেকে ২২ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করছেন।
বরই চাষী শওকত আলী জানান, ৫ একর জমিতে ২ হাজার টি বরই গাছ নিয়ে বাগান গড়ে উঠেছে। বর্তমানে হরতাল অরোধে বরই গাছ থেকে বরই সংগ্রহ করে যদিও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এর পরও এ বছর সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা আয় হবে। গত ১ মাস ধরে বাজারে বরই বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, হরতাল অবরোধের কারণে আড়তদাররা সরাসরি না আসলেও খুচরা বিক্রতারা বাগান থেকে এসে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাগান তৈরির খরচ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ দুই বছরে বাগানে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। এ বরই বিক্রি করে ব্যয়ের টাকাসহ প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।
তার বরই চাষে এমন সাফল্য দেখে এলাকার মানুষ উৎসাহিত হয়েছেন। শওকত আলী শুধু বরই নয় লেবু ও পিয়ারার চারা গাছ লাগিয়ে বাগান আরও বড় করার পরিকল্পণা করছেন।
বরই চাষে এমন সাফল্যের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও কুলাউড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ এই বরই বাগানের কোন তথ্যই নেই!
এ ব্যাপারে টিলাগাঁও ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্যামল বরণ সিংহ বলেন, তিনি মাঝে মধ্যে বাগানটি পরিদর্শন করে পর্রামশ দেন। তার এমন সাফল্য দেখে আশপাশের লোকজন বরই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।