গুয়ান্তানামো উপসাগরের নিয়ন্ত্রণ না ছাড়ার ঘোষণা আমেরিকার
প্রকাশিত হয়েছে : ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ৮:২২ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
কিউবার গুয়ান্তানামো উপসাগরের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছাড়বে না বলে ঘোষণা করেছে আমেরিকা। কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো গুয়ান্তানামোর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে আহ্বান জানানোর পর হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দেয়।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ান্তানামো কারাগারটি বন্ধের পক্ষে হলেও সেখানকার নৌ ঘাঁটি বন্ধের কোনো ইচ্ছে তার নেই। কিউবার কাছ থেকে লিজ নেয়া গুয়ান্তানামো উপসাগরেই রয়েছে আমেরিকার কুখ্যাত বন্দিশিবির।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে মার্কিন টুইন টাওয়ারে হামলার পর ওই কারাগারে বহু সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে সেখানে আটক রাখে মার্কিন বাহিনী। আমেরিকার সীমানার বাইরের এলাকা হওয়ায় মার্কিন প্রচলিত আইন গুয়ান্তানামোর বন্দিদের জন্য প্রযোজ্য হবে না- বিচার বিভাগের এমন ঘোষণা পাওয়ার পর বহু মুসলমানকে ধরে নিয়ে সেখানে অকথ্য নির্যাতন শুরু করা হয়। এ কাজ শুরু করে বুশ প্রশাসন।
এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনে আমেরিকায় ক্ষমতার পটপরিবর্তন ঘটে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন ডেমোক্রেটিক পার্টির বারাক ওবামা। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর অন্যতম ছিল এ কারাগার বন্ধ ঘোষণা করা। কিন্তু এখনো তিনি তা বন্ধ করেননি।
গুয়ান্তানামো বে’ ১৯০৩ সালে কিউবার তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে লিজ নেয় আমেরিকা। তৎকালীন সরকার অনেকটা বাধ্য হয়েই ওই এলাকাটি লিজ দিয়েছিল। কারণ এর আগে ১৮৯৮ সালেই ওই এলাকা দখলে নিয়ে সেখানে নৌ ঘাঁটি নির্মাণ করে বসে আমেরিকা।
১৯৫৯ সালে কিউবায় বিপ্লব হওয়ার পর গুয়ান্তানামোর ওপর মার্কিন আধিপত্যকে অবৈধ ঘোষণা করে বিপ্লবী সরকার। তারা গুয়ান্তানামো উপসাগরের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়ার দাবি জানায়। কিন্তু আমেরিকা তাতে কর্ণপাত করেনি।
এরপর গত বুধবার কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো ঘোষণা করেছেন, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি পূর্ব শর্ত হলো ১১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের গুয়ান্তানামো এলাকাটি ফিরিয়ে দিতে হবে।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে এখনো যে অনেক বাধা রয়ে গেছে এ ঘোষণা থেকে তা সুস্পষ্ট হয়েছে। কিউবা স্বাভাবিকভাবেই তাদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ গুয়ান্তানামো ফেরত চাইছে।
কিউবার সঙ্গে আমেরিকার বিদ্বেষী আচরণের ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৯৫৯ সালে দেশটিতে বিপ্লব সফল হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত করে ফেলা হয়েছে কিউবাকে। দীর্ঘ ৫৪ বছর পর গত ডিসেম্বরে বারাক ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেন। এরপর কিউবাও এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দ্রুত সংসদে পাস করায়।
কিন্তু আমেরিকার স্বেচ্ছাচারী নীতির কারণে দুই দেশের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেছে। এছাড়া আমেরিকার কংগ্রেসেও এ বিষয়ে ব্যাপক বিরোধিতা চলছে।