প্যারিসে পত্রিকা অফিসে বন্দুকধারীর হামলা, সম্পাদকসহ নিহত ১২
প্রকাশিত হয়েছে : ৮ জানুয়ারি ২০১৫, ৪:২২ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শার্লি হেবদো নামে একটি বিদ্রুপাত্মক সাময়িকীর অফিসে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে।
এতে অন্তত ১২ জন লোক নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাময়িকীটির প্রধান সম্পাদক স্টেফান শার্বোনিয়ার, তিনজন কার্টুনিস্ট এবং একজন পুলিশ রয়েছে। ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পুলিশ আরো বলছে, বন্দুকধারীরা ‘আল্লাহু আকবর’ বলে শ্লোগান দেয় এবং তারা চিৎকার করে বলছিল, ‘আমরা নবীর হয়ে প্রতিশোধ নিয়েছি।’
বন্দুকধারীরা এর পর একটি গাড়িতে করে পালিয়ে যায়। বেরিয়ে যাবার সময়ও তাদের গুলিতে একজন পুলিশ আহত হয়।
ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলন্দ ঘটনাস্থল দেখতে গিয়েছেন। সেখানে তিনি একে একটি ‘বর্বর সন্ত্রাসী হামলা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কালো হুডওয়ালা পোশাক পরা দুজন লোক কালাশনিকভ রাইফেল নিয়ে পত্রিকা অফিসে ঢোকে এবং গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। এসময় পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বৈঠক চলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। একটু পরই আক্রমণকারীরা একটি কালো গাড়িতে করে পালিয়ে যায়।
সবশেষ খবরে জানা যায়, কালো গাড়িটি প্যারিসের শহরতলীতে পাওয়া গেছে। আক্রমণকারীদের খোঁজে অভিযান শুরু হয়েছে এবং সারা প্যারিস জুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে।
পত্রিকাটি তার সবশেষ টুইটে ইসলামিক স্টেট নেতা আল-বাগদাদিকে নিয়ে একটি কার্টুন প্রকাশ করেছিল। শার্লি হেবদো পত্রিকাটি আগেও হামলার শিকার হয়েছিল।
২০১১ সালের পত্রিকাটি ইসলামের নবী মুহাম্মদকে তাকে ‘প্রধান সম্পাদক’ বলে উল্লেখ করার পর পত্রিকাটির অফিসে বোমা হামলা হয়।
প্যারিসে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে, আইফেল টাওয়ারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সৈন্যরা টহল দিচ্ছে।
এর পরের বছর পত্রিকাটি আবার নবী মুহাম্মদের একটি কার্টুন প্রকাশ করে।
২০০৬ সালেও এই পত্রিকাটি ড্যানিশ পত্রিকায় প্রকাশিত নবী মুহাম্মদকে নিয়ে আঁকা কার্টুন পুনর্মুদ্রণ করেছিল, এবং তখন থেকেই তারা সবার নজরে আসে।
ফ্রান্সের বর্ণবাদবিরোধী আইনে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে মামলা হওয়া সত্ত্বেও তারা বিতর্কিত কার্টুন প্রকাশ চালিয়ে গেছে। সাময়িকীটির সম্পাদক পুলিশ প্রহরায় থাকতেন।
আক্রমণকারীদের শনাক্তের দাবি
ফ্রান্সের প্যারিসে রম্য ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর কার্যালয়ে হামলায় ১২ জন নিহত হওয়ার পর পুলিশের বরাত দিয়ে ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম গুলো সন্দেহভাজন তিনজন হামলাকারীর পরিচয় জানাচ্ছে।
তিনজনের মধ্যে দুইজন ভাই যারা ইসলামি চরমপন্থি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপর জনের নামে ইরাকে জিহাদি পাঠানোর দায়ে আগেই থেকেই অভিযোগ রয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন এই হামলা বাক স্বাধীনতা ও ফ্রান্সের মূল চেতনার ওপর আঘাত।
তিনি বৃহস্পতিবার জাতিয় শোক দিবস ঘোষণা করেছেন।
এই হামলায় পর ফ্রান্স জুড়ে হাজার হাজার মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।