জৈন্তাপুরে ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ৪
প্রকাশিত হয়েছে : ১ জানুয়ারি ২০১৫, ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজার থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ ব্যবসায়ী যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে। গতকাল ৩১ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ফতেপুর ইউনিয়নের উপর শ্যামপুর গ্রামের একটি পাহাড় সংলগ্ন স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার মো. ইউনুছ আলী (৩২) হরিপুর বাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী ও হরিপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের ইব্রাহীম আলীর পুত্র।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় জৈন্তাপুর মডেল থানার পুলিশ ৪ জন কে আটক করেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এস আই আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মাটির নিচে চাপা দেয়া অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে হরিপুর বাজার থেকে মৎস্য খামারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ ইউনুছ ফোনে বাড়িতে কথা বলে যান। পর থেকেই তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ইব্রাহীম আলী পরদিন জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ জানিয়েছে জিডির সূত্র ধরে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে এসআই রাজ্জাক ঘটনার তদন্ত করতে মাঠে নামেন। তদন্তের এক পর্যায়ে খান চা-বাগান এলাকার পাহাড় থেকে নিহত ইউনুছের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি আগুনে পোড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এতে পুলিশের সন্দেহ হয় নিখোঁজ হওয়া ইউনুছকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হতে পারে।
পুলিশ হরিপুর গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র শাহজালাল (রা.) কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র জুয়েল আহমদ (২০) কে আটক করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে লামাশ্যামপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে রাসেল আহমদ উরফে রাসেল ড্রাইভার (২৫), একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে বেলাল আহমদ উরফে বেলাল ড্রাইভার (২২),একই গ্রামের কুতুব আলীর ছেলে কয়েছ আহমদ উরফে কয়েছ মিস্ত্রি (২৬) কে আটক করে। আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে রাসেলের কাছে নিহত ইউনুছ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পান। পাওনা টাকার জন্য গত কয়েক দিন থেকে রাসেলকে চাপ দেন। এতে রাসেল ক্ষুব্ধ হয়ে ইউনুছকে হত্যার পরিকল্পনা করে। টাকা দেয়ার কথা বলে উপর শ্যামপুর এলাকার নির্জন পাহাড়ি এলাকায় ইউনুছকে ধরে নিয়ে য়ায়। ঘাতকরা তাকে হত্যা করে মাটির নিচে চাপা দিয়ে লাশ গুম করে রাখে। পুলিশ আটককৃতদের দেয়া তথ্যমতে টিলা তল্লাশী করে উপর শামপুর এলাকার নির্জন পাহাড় থেকে ইউনুছের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। এদিকে লাশ উদ্ধার সংবাদ পেয়ে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষ গতকাল বুধবার বাদ এশা তার জানাজার নামাজ শেষ তাকে পারিবারিক গোরুস্থনে দাফন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় দায়ের করা জিডির সূত্রে ধরে এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করতে মাঠে নামে। গোপনে আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় ৪জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।