‘আমলাদের সঙ্গে খালেদার বৈঠক’ নিয়ে উত্তপ্ত হয় ওঠছে রাজনীতি
প্রকাশিত হয়েছে : ৭ ডিসেম্বর ২০১৪, ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
গত ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেন। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে বৈঠকের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। তবে এই নিয়েই বাংলাদশের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে। চলছে বিবৃতি, পাল্টা বিবৃতি।
সংবাদ মাধ্যম বলছে, খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পরে তাঁর গুলশানের অফিসে কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। গণমাধ্যমে কর্মকর্তাদের নাম পরিচয় এবং ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হলেও বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানাতে পারেনি।
গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই বৈঠক নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, ‘‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে ওই বৈঠকে অংশ্রগহণকারীদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।” তিনি খালেদা জিয়াকে ‘গভীর রাতের ষড়যন্ত্র’ ত্যাগের পরামর্শ দেন।
এরইমধ্যে ওই বৈঠক নিয়ে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ‘‘বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী গোপন বৈঠক করেছেন তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।” তিনি বলেন, ‘‘গোপন বৈঠক সম্বন্ধে গোয়েন্দারা আগেই জানত।” এক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা ছিল না বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি দেয়ার মামলায় খালেদা জিয়াই হবেন প্রধান আসামি।” তিনি দাবি করেন, ‘‘বিএনপির এই ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। উত্তরায় মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে ২০০৬ সালেও এমন বৈঠক হয়েছে।” প্রশাসনের কাছে জনগণ নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘‘তাঁদেরকে তাঁদের কাজই করতে হবে। গভীর রাতে বৈধ সরকারকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা তাঁদের কাজ নয়। এটি অপরাধ। এই অপরাধ কেবল তাঁরাই করেননি। সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে এই মামলায় প্রধান আসামি হবেন খালেদা জিয়াই।”
অন্যদিকে শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, ‘‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের কোনো বৈঠক হয়নি। ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যাওয়ার নজির বিএনপি-র নয়, বরং তা আওয়ামী লীগের।”
বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে গণমাধ্যমের খবরের কোনো ভিত্তি নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘‘গুলশানের কার্যালয়ে সব সময় মিটিং হয়। প্রতিদিন দলের উপদেষ্টারা আসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবারের মিটিং নিয়ে পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ বেরিয়েছে, এর কোনো সত্যতা নেই।”
তিনি বলেন, ‘‘দেশের রাষ্ট্র্র ক্ষমতায় বসতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ষড়যন্ত্রের দরকার হয় না। তিনি রাজনীতিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বরাবরই আওয়ামী লীগ করে আসছে।”
আর বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘‘সরকার যেভাবে ছক তৈরি করছে তাতে যে-কোনো মুহূর্তে দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) আটক করতে পারে।” নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই প্রস্তুতি নিন। যাতে সময় হলেই বেরিয়ে পড়তে পারেন। নেত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে থাকবেন না।”