জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে জোরদার করা হচ্ছে স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যক্রম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩ ডিসেম্বর ২০১৪, ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ
মহ্সীন মুরাদ :: ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন কাজের জনসচেতনতার লক্ষেই গঠন করা হয় স্ট্যান্ডিং কমিটি। সদর উপজেলার আমতৈল ইউনিয়ন পরিষদেও এ লক্ষে ১৩টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবকটি কমিটি সক্রিয় রয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। এবং এ কমিটি সম্পর্কে সবাই সচেতন আছেন। এ কমিটির সাধারণ সভা নিয়মিত হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন ইউনিয়নের সদস্য, সচিব ও চেয়ারম্যান। তবে সাধারণ জনগণের সাথে বিষয়ে আলাপ হলে জানা যায়, বেশিরভাগ লোক এ কমিটি সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞাত নয়। তাই নীতি নির্ধারকদের উদ্যোগে প্রশিক্ষণমূলক কার্যক্রমের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
জানা যায়, স্ট্যান্ডিং কমিটির সাধারণ সভাকে নিয়মিত আরো জোরদার করার জন্য বৈঠক করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রতিটি কমিটির সাধারণ সভায় চা চক্রবাবত যে কোন খরচ দিতেও যে রাজি আছে ইউনিয়ন পরিষদ তহবিল সেটাও পরিস্কার করে জানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ। ইউনিয়নের সকল কর্মকান্ড, সরকারি বরাদ্দ, প্রকল্পভিত্তিক কাজ কর্ম, যে কোন সেবা প্রদানের বিষয় স্ট্যান্ডিং কমিটি দ্বারা সাধারণ জনগণ জানতে পারে। এ কমিটিতে এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্য থেকে শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব , সাংবাদিক, স্কুল মাস্টারগণ এ কমিটিতে বলবত থাকায় কারণে স্পষ্ট হয়ে উঠে ইউনিয়নের সকল কার্যক্রম।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদন করার লক্ষে ১৩টি বিষয়ে স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়। এমন আইন ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবরে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যায় উল্লেখ থাকলেও এ কমিটি সম্পর্কে জ্ঞান সাধারণ জনগণের অনেক কম। জনগণকে অবহিত করার লক্ষেই স্থানীয় সরকার নীতি নির্ধারকদের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রশিক্ষণমূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন জনসাধারণ।
আইন অনুযায়ী, প্রতিটি কমিটি হবে ৫ সদস্যে বিশিষ্ট। এতে সভাপতি, সদস্য সচিব, বাকি ৩জন সদস্য হিসেবে থাকবেন। কেননা ইউনিয়ন পরিষদকে গতিশীল ও শক্তিশালী করার জন্য কমিটিগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করতে ২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদ অধিশাখার এক পরিপত্রের মাধ্যমে স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যাবলীও নির্ধারণ করা হয়েছিল। ইউনিয়ন পরিষদ অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ধারা ৩৮-এর বিধান মতে, অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা ও গণশিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা ও মহামারি নিয়ন্ত্রণ, হিসাব ও নিরীক্ষা, কৃষি ও অন্যান্য উন্নয়ন মূলক কাজ, সমাজ কল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার, কুটির শিল্প ও সমবায়, আইনশৃংখলা, নারী ও শিশু নির্যাতন, মৎস ও পশু সম্পদ, বৃক্ষরোপন, ইউপির পল্লী পূর্ত কর্মসূচি, গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন ইত্যদি বাস্তবায়ন করে তা জনগণকে স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া। যাতে করে জনসাধারণ জানতে পারে যে, সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আমতৈল ইউনিয়নের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটি মধ্যে স্যানিটেশন পানি সরবরাহ পয়:নিষ্কাশণ সভাপতি ইউনিয়নের ৭ ৮ ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য, শিপ্রা রানী পাল, শিক্ষা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমিটির সভাপতি ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সুফি মিয়া, পল্লী অবকাটামো উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষন কমিটির সভাপতি ৮ নং সদস্য মো. মশাহিদ হোসেন, ১ ২ ৩ নং ওয়ার্ডের জন্মনিবন্ধন কমিটির সভাপতি নারী সদস্য নাজমা বেগম বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ১৩ কমিটি রয়েছে। সে সম্পর্কে আমরা সচেতন রয়েছি। আমাদের সভাগুলোও নিয়মিত হচ্ছে।
একই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম মইনুল বলেন, ইউনিয়ন ১৩ টি কমিটি কার্যকর আছে। তবে সেগুলোর কার্যক্রম আরো শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি। আমরা আশা করি আমাদের কমিটিকে আরো শক্তিশালী করতে পারবো।
ইউনিয়নের মুসা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়নে স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা হয় না এটা বলবনা। কারণ সাধারণ সভাতেতো আমরা যারা এ কমিটিতে আছি সবাই বসে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করা। এরকম সভা আমরা প্রতিদিনে অন্তত ৩ থেকে ৫টি করে থাকি। সব মিলিয়ে কিছুদিনের মাঝে আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটি আরো সক্রিয় হয়ে উঠবে।
একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজিত দাশ বলেন, আমার ইউনিয়নে ১৩ স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। কমিটিগুলোর কার্যক্রম সক্রিয় আছে। গত জুনে আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটি নিয়ে মিটিং করেছি। এরপরেও আরো সভা করেছি। আমার ইউনিয়ন সকল বিষয়ে এগিয়ে আছে বলে আমি মনে করি। কেনন এ বছর আমরা পরিবার পরিকল্পনায় বিভাগের মাঝে চ্যাম্পিয়ান হয়েছি।
স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে জনসাধারণের কী ফায়দা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা জনজনসচেতনার জন্য, এ কমিটির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কোন এলাকায় কোন ধরনের চাহিদা রয়েছে। কোন এলাকায় কোন কাজ করাতে হবে। তখন আমরা এ ইনফরমেশনের মাধ্যমে সে সকল কাজ করে থাকি। তাতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পায়। এই লক্ষেই স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়।