কমলগঞ্জে আমনের উৎপাদন খরচ পাচ্ছেন না কৃষকরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ নভেম্বর ২০১৪, ১১:১০ পূর্বাহ্ণ
জয়নাল আবেদীন, কমলগঞ্জ
কমলগঞ্জ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে চাষাবাদ করলেও উৎপাদন খরচই পাচ্ছেন না কৃষকরা। মহাজনদের কাছ থেকে আগাম টাকা নেয়ার কারণে কৃষকদের একটি অংশ ফসল কেটে ঘরে তোলার আগেই মহাজনদের গোলায় দিচ্ছেন। ফলে হাড়ভাঙা খাটুনীর পরও মহাজনী ধান ব্যবসায়ীরা ঘরে বসেই লাভের সুফল ভোগ করছেন। সম্প্রতি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মধ্য ও নিম্নবিত্ত কয়েজন কৃষকদের অভিযোগে এই চিত্র ফুটে উঠে।
জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলিয়ে ১৬ হাজার ৯শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। বর্তমানে
চাষাবাদকৃত জমির প্রায় ৫০ শতাংশ ফসল কাটা হয়েছে। পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক মনাফ মিয়া, ছনু মিয়া, রহিমা মিয়া, শমশেরনগরের ফজলু মিয়া, মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চান মিয়া, তাজুল ইসলাম, মোজাহিদ আলীসহ কৃষকরা জানান, জমি তৈরি, সার, বীজ, কীটনাশক থেকে শুরু করে ধান মাড়াই সব খরচ মিলিয়ে প্রতিমণ ধানের উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা। এছাড়াও বন্যা, জলাবদ্ধতা, পোকার আক্রমন এসব বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ফসল উৎপাদন করতে হয়েছে।
কৃষকরা বলেন, উৎপাদনের খরচ স্থানীয় বড় বড় মহাজনী ধান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আগাম চার থেকে সাড়ে চারশ’ টাকা হারে নিতে হয়েছে। ফলে ধান কাটার সাথে সাথেই মাড়াই দিয়ে পরিস্কার করে শুকিয়ে মহাজনদের গোলায় পৌঁছে দিতে হয়। এছাড়াও বর্তমানে ধানের বাজার দর পাঁচশ’ টাকা থাকায় এখন অনেকেই বাধ্য হয়ে এই দরে ধান বিক্রি করছেন। অথচ মহাজনদের কাছে ধান যাওয়ার কিছু দিন পর ধানের দাম বেড়ে যাবে। এই সুযোগে মহাজনরাই লাভবান হবেন বলে কৃষকরা মন্তব্য করেন।
পতনঊষার ও মুন্সিবাজারের দুজন মহাজনী ধান ব্যবসায়ী জানান, বেশ কিছু কৃষক মজুরের খরচ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ধান এনে দিবে বলে বিশ, ত্রিশ মন করে আগাম টাকা নিয়ে যায়। কেউ কেউ যথা সময়ে ধান দিয়ে দেয়, আবার কেউ কেউ ধান দিতেও বিলম্ব করে। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, লাভ ক্ষতি মিলিয়েই কৃষরা বিভিন্ন মৌসুমে চাষাবাদ করছেন। তবে আমন মৌসুমে ধানে দাম না পেলে কৃষকদের অনেক ক্ষতি গুনতে হয়।