সীমান্তের নো ম্যান্সল্যান্ডে শক্তশালী বিস্ফোরক পুঁতেছে মিয়ানমার
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ নভেম্বর ২০১৪, ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্সল্যান্ডে ডিনামাইটের চেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরক আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) স্থাপন করেছে মিয়ানমার! বাংলাদেশকে অবহিত না করেই সীমান্তে ভয়ঙ্কর এই বিস্ফোরক বসিয়েছে প্রতিবেশী এই রাষ্ট্র। সীমান্ত থেকে ইতিমধ্যে কয়েক দফায় প্লাস্টিক মাইন ও আইইডি ডিভাইস উদ্ধারও করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বাংলাদেশি সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে মিয়ানমারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরের গোয়েন্দা পরিদপ্তরের অপারেশন ও প্রশিক্ষণ শাখার গোয়েন্দা সেকশনের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন স্বাক্ষরিত এই গোয়েন্দা প্রতিবেদন গত ১৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ২০ অক্টোবর সেই প্রতিবেদন পাঠানো হয় বিজিবি দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে অবহিত করা হয় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা পরিদপ্তর, সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তর ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের সদর দপ্তরে। সদর দপ্তর থেকে এমন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করেন বিজিবি দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুল করিম।
বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে উদ্ধার হচ্ছিল প্লাস্টিক মাইন ও আইইডি ডিভাইসের মতো বিস্ফোরক। বিজিবির ধারণা ছিল, এসব বিস্ফোরক কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনী দিয়ে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজিবি নিশ্চিত হয়েছে আইইডি নামক ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক স্থাপন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্ত বাহিনীই স্থাপন করেছে এসব বিস্ফোরক।
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরএসও ও এএলপি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের দুর্গম পার্বত্য এলাকা ব্যবহার করছে ধারণা থেকেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সীমান্ত বাহিনী বুবি ট্র্যাপস সদৃশ এই ডিভাইস বসিয়েছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সীমান্ত বাহিনীর এই পদক্ষেপ সীমান্তকে ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ। এর ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা ও সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। পাশাপাশি ১৯৮০ সালে সম্পাদিত বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলেও প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারের এ কাজের ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে বলা হয়। একই সঙ্গে সীমান্তের নো ম্যান্সল্যান্ডে বিজিবির নিয়মিত টহল বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সেক্টর ও ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।