ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুবার্ষিকীতে পশ্চিম তীরে উত্তেজনা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০১৪, ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মাঝেই ইয়াসির আরাফাতকে স্মরণ করছে ফিলিস্তিন। তেল আবিব ও পশ্চিম তীরে দুটি ছুরি হামলার ঘটনায় দুজন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন। আল আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করেও ফিলিস্তিনে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা।
গাজায় ফিলিস্তিনের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভা বোমা বিস্ফোরণের কারণে শেষ পর্যন্ত আর হতে পারেনি। কিছু মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে গেলেও মূল অনুষ্ঠান নিরাপত্তার অভাবের কারণে বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে রামাল্লায় ফাতাহ নেতা এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফাতাহ-র প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক স্মরণসভায় আল আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ধর্মযুদ্ধের আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। গোঁড়া ইহুদিরা সে এলাকায় প্রার্থনা করার সুযোগ দাবি জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তাঁর দেশ আল আকসায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি আরো বলেন, জেরুসালেমের বিবদমান এলাকাটিতে প্রার্থনার সুযোগের দাবি, ইসরায়েলের দাবি নয়।
তারপরও উত্তেজনা কমেনি। হঠাৎ ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার জন্য অবশ্য ইসরায়েলকেই দায়ী করেছেন মাহমুদ আব্বাস। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট বলেন, জেরুসালেমের বিতর্কিত এলাকায় ইহুদিরা না গেলে আকস্মিকভাবে এমন উত্তেজনা সৃষ্টি হতো না। এ সময় বিবাদপূর্ণ এলাকাটিতে ইহুদিদের প্রবেশকে ‘উস্কানিমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইসরায়েলকে এমন উদ্যোগ থেকে তাদের জনগণকে বিরত রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন আব্বাস।
তবে ইয়াসির আরাফাতের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানে মাহমুদ আব্বাসের বেশিরভাগ কথাই ছিল হামাসের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ঐক্য স্থাপনের সম্ভাবনাকে ‘ধ্বংস’ করছে হামাস। শুক্রবার ফাতাহ-র কার্যালয় এবং ফাতাহ নেতাদের গাড়ির ওপর বেশ কয়েকটি বোমা হামলা চালানো হয়। আব্বাস এ জন্যও হামাসকে দায়ী করেছেন। হামাস বলছে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্য ‘মিথ্যা’।
ফাতাহ-র প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসির আরাফাত ১৯৬৯ সালে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগ্যানাইজেশন (পিএলও) এর প্রধান নির্বাচিত হন। স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার লড়াইটা অনেকদিন জন্মভূমির বাইরে থেকেই করতে হয়েছে তাঁকে। ১৯৯৩ সালে অসলো মধ্যবর্তী শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর পশ্চিম তীরে ফেরেন তিনি। জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছে রামাল্লায়, অন্তরীন অবস্থায়। ‘শান্তির পথে অন্তরায়’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁকে অন্তরীণ থাকতে বাধ্য করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। সেই অবস্থাতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ইয়াসির আরাফাত। চিকিৎসার জন্য প্যারিসের একটি হাসপাতালে নেয়া হয় তাঁকে। ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ৭৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি। কারণ হিসেবে মস্তিস্কের রক্তক্ষরণের কথা বলা হলেও তাঁর মৃত্যু এখনো রহস্যে ঢাকা। সুইডেনের এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ইয়াসির আরাফাতকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।