চীনে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে আরো সুবিধা চাইলেন রাষ্ট্রপতি
প্রকাশিত হয়েছে : ৯ নভেম্বর ২০১৪, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
পূর্বদিক ডেস্ক ::
বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনতে চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে আরো সুবিধা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল শনিবার গ্রেট হলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রাষ্ট্রপতি এ সুবিধা চান।
এশিয়া-প্যাসিফিক কো-অপারেশন (অ্যাপেক) সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। পরে ‘স্ট্রেনদেনিং কানেক্টিভিটি পার্টনারশিপ’ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন মো. আবুদল হামিদ। রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরকে (বিসিআইএম-ইসি) এ অঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, চীনের জন্য বিসিআইএম-ইসি প্রাচীন দক্ষিণাঞ্চলীয় সিল্ক রোড পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে সরাসরি ভৌগোলিক ও কমিউনিটি যোগাযোগ স্থাপন হবে, যা এ অঞ্চলের লাখ লাখ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অগ্রগতির সুযোগ করে দেবে। খবর বাসস ও চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল।
আধঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে আবদুল হামিদ ও শি জিনপিং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতিতে চীনের ভূমিকার প্রশংসা করে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিগত বছরগুলোয় বেড়েছে। এ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন হয় ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের মধ্য দিয়ে। ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক চীন সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে সম্পাদিত বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়টি উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘আমরা চীনের সহযোগিতায় এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছি, যাতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন আরো বেগবান হয়।’
বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনতে এরই মধ্যে চীনের কিছু পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী বছরগুলোয় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরো জোরদার হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও গত অর্থবছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার।
শি জিনপিংও বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য চীনের অনুদান ও সাহায্য অব্যাহত রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে আশ্বস্ত করেন।
চীনের রাষ্ট্রপতি বলেন, সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট ও একুশ শতকের মেরিটাইম সিল্ক রোড তৈরিতে চীনের যে পরিকল্পনা রয়েছে, তার মাধ্যমে উভয় দেশের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ বাড়বে। এছাড়া বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোরের গুরুত্ব তুলে ধরতে যৌথভাবে কাজ করতে পারে চীন ও বাংলাদেশ।
বেইজিংয়ের ফাং হুয়া হলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে স্বাগতিক চীন ছাড়াও পাকিস্তান, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, মঙ্গোলিয়া, লাওসের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশ নেন।
চীনের জন্য বিসিআইএম-ইসি প্রাচীন দক্ষিণাঞ্চলীয় সিল্ক রোড পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর মাধ্যমে সরাসরি ভৌগোলিক ও কমিউনিটি যোগাযোগ স্থাপন হবে। এতে এ অঞ্চলের লাখ লাখ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন হবে।
চীনের প্রবৃদ্ধি অর্জন থেকে শিক্ষা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমরা সবসময় আঞ্চলিকতায় বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, সব ক্ষেত্রে আমাদের সংযোগ প্রয়োজন। আমরা জ্ঞান, সংস্কৃতি, সড়ক, রেল ও বিমানের মাধ্যমে পরিবহন, প্রযুক্তি, জনগণের চলাচল, পণ্যসেবা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যোগাযোগ বাড়াতে চাই।’