মৌলভীবাজারের হাওড়গুলোতে বোরো চাষের ধুম
প্রকাশিত হয়েছে : ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬:৩১ অপরাহ্ণ
বিশেষ প্রতিবেদক::
প্রণোদনার বীজ-সার ও মনু নদীর সেচ প্রকল্পের পানি পেয়ে মৌলভীবাজারের কাউয়াদিঘি হাওড়সহ দেশের বৃহত্তম হাওড় হাকালুকি এবং জেলার সবকটি হাওড় ও আশপাশের ফসলি জমিতে বোরো চাষাবাদের ধুম পড়েছে। চাষের অনুকূল পরিবেশে এরই মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ চাষাবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, বোরোর ফলন বাড়াতে এ বছর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মনু-সেচ প্রকল্পভুক্ত এলাকায় মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওড়পাড়ে আগে ভাগেই বোরো চাষ শুরু হয়। মাঘের কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকেই জমি প্রস্তুতি ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা।
দেশের বৃহত্তম হাওড় হাকালুকিসহ হাইল ও কাইঞ্জার হাওড়েও বোরো চাষের ধুম পড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ৪৭ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের বীজ পেয়েছেন ১৫ হাজার কৃষক এবং উফশী জাতের বীজ পেয়েছেন ৩২ হাজার কৃষক।
উপজেলার পানিসারা গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সেচ সুবিধা ও প্রণোদনা পাওয়ায় আমরা এবার ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বোরো চাষ করছি। যদিও শুরুর দিকে কিছু ক্ষতি হয়েছিল, তবে এখন পরিস্থিতি ভালো।’
মনু নদী প্রকল্পভুক্ত কাউয়াদিঘি হাওড়ে মূলত ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়। দেশের বৃহত্তম হাওড় হাকালুকিতে ১৩ হাজার ২২২ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে। সব মিলিয়ে জেলার সবকটি হাওড়ে এবার ২৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার অতিরিক্ত ১ হাজার হেক্টর জমিকে চাষের আওতায় আনা হয়েছে। অনুকূল পরিবেশ থাকায় ৬০ শতাংশ চাষাবাদ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছু এলাকায় পোকার আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
জেলা হাওড় রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক খসরু মিয়া চৌধুরী জানান, সেচ খাল সংস্কার এবং সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনার জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এতে উৎপাদন আরও ভালো হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, কৃষকদের প্রণোদনার সব ধরনের সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ বছর জেলায় ৬২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ২৩১ মেট্রিক টন চাল, যা গত বছরের তুলনায় ৫ হাজার ৫৮৯ মেট্রিক টন বেশি।