বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে শাবিপ্রবি ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সিলেটের আম্বরখানায় ব্রিটানিয়া হোটেলে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মাসুদ রানা তুহিনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সমন্বয়ক আবু সালেহ মুহাম্মদ নাসিম, সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জুনায়েদ আহমদ, এইচআরডি সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ওয়াসিম মুহাম্মদ শামস, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি ইবরাহীম সৌরভ ও জহিরুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেন, ‘দেশের প্রয়োজনে ছাত্রশিবির ফ্যাসিবাদবিরোধী সকলের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে প্রস্তুত। ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গণহত্যাকারী দল আওয়ামীলীগ দেশে নানা অরাজকতা করার চেষ্টা করছে। এসব অরাজকতা প্রতিরোধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরী।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র সমন্বয়ক আবু সালেহ মুহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলনে আমাদের সবার ঐক্যের ভিত্তি ছিল আমরা সবাই আওয়ামীলীগবিরোধী। এই ভিত্তির উপরই আমরা আমাদের ঐক্য বজায় রাখবো। জুলাইয়ের আন্দোলনে সকলের অংশগ্রহণ রয়েছে, আমরা সকলে মিলেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘ছাত্রশিবির গত ১৬ বছর যে জুলুমের শিকার হয়েছে তা খুবই দু:খজনক। আওয়ামীলীগ গত ১৬ বছর যে টাকা পাচার করেছে, সেই টাকা এখন কথা বলছে। তারা এসবের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জুনায়েদ আহমদ বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়েও রক্ষা করা কঠিন। আমরা ‘৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেও রক্ষা করতে পারিনি বলে ‘২৪ সালে আবারও স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। সুতরাং আবারও কেউ স্বাধীনতা নস্যাৎ করতে চাইলে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিরোধ করতে হবে।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতীয় ঐক্য অনেক বেশী জরুরী ছিল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাহ্য করে একদল দেশকে নিজের সম্পত্তি সাব্যস্ত দেশকে দুরাবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমরা ‘২৪-এ যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তা যেন ঐক্যের অভাবে হাতছাড়া না হয়। আগে রাজনীতির নীতি ছিল Winner takes all. ফলে রাজনীতি নিয়ে ছাত্রদের মাঝে নেগেটিভ ধারণা তৈরি হয়েছে। আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে নতুন রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ছাত্রদের মূলকাজ হবে পড়াশোনা পরে রাজনীতি। নতুন রাজনীতি হবে জবাবদিহিতামূলক, শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য।’
জাতীয় ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ওয়াসিম মুহাম্মদ শামস বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা ছিল। কিন্তু আন্দোলন সফল হওয়ার পর ঐক্য ধরে রাখতে না পারায় আন্দোলনের ফসল ঘরে তোলা যায়নি। ক্ষমতাসীনরা ছাত্রদের ঐক্যকে নষ্ট করে আন্দোলনের অর্জনকে ধ্বংস করেছে। ফলে বর্তমানেও ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।’
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক সময় তরুণ প্রজন্ম বলতো I hate politics. কিন্তু ‘২৪-এর আন্দোলন I love politics-এর ফসল। এটা এখনও জারি রাখা দরকার। রাজনীতিতে ভাল মানুষ না আসলে সেখানে খারাপ মানুষ আসবে। রাজনীতির প্রতি অনীহা দূর করার জন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর উচিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বসা।’
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম ইমন বলেন, ‘আওয়ামীলীগ পুনর্বাসনের সকল প্রচেষ্টাকে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। পুলিশ বাহিনীতে এখনও রিফর্ম না হওয়ায় একে একে ঝামেলাগুলো ঘটেই যাচ্ছে। ছাত্ররা সবসময় মাঠে থাকতে পারবে না। গুম, খুন, হত্যাকান্ডে লিপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে পুলিশ বাহিনীকে রিফর্ম করতে হবে।’
উপস্থিত সকল ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।