লাপাত্তা চেয়ারম্যান জিমিউর, দুর্ভোগে পৃথিমপাশা ইউনিয়নবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৯:৫৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী ছুটি না নিয়েই ইউপি কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তার অনুপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেও নিচ্ছেন না সাধারণ জনগণ। তার এমন আনাড়িকাণ্ডে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। বিপাকে পড়েছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষরাও।
জানা গেছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান অসুস্থতার দোহাই দিয়ে এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। সরকারিভাবে ছুটি না নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থতার কথা বলে আত্মগোপনে থাকায় এলাকায় নানান গুঞ্জন চলছে। কেউ বলছেন চেয়ারম্যান লন্ডন, কেউ বলছেন ইন্ডিয়া, আবার কেউ বলছেন অসুস্থ, কেউবা বলছেন তিনি ছুটিতে আছেন! অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছুটির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ মৌলভীবাজার কার্যালয়ে আবেদন করলেও তা এখনও গৃহীত হয়নি।
ইউনিয়নে সেবা নিতে যাওয়া শিকড়িয়া গ্রামের এক বৃদ্ধ বলেন, অনেকদিন ধরে তিনি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, কিন্তু ইউনিয়নে এলে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ। একই কথা বলেন ইউনিয়নে আসা একাধিক সেবাগ্রহীতা।
কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল একেবারে জিরো। তাদের সম্মানিও দেওয়া হয়নি বহুদিনের৷ চেয়ারম্যান আর সচিবের একক আধিপত্যে ইউপি সদস্যরা রীতিমতো কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। উন্নয়ন বলতে দু-একটি নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া কোনো ওয়ার্ডে একটা ইটও লাগেনি। এতে হতাশ ইউপি সদস্যসহ সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিষদের মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে বিভিন্ন সনদের ফি। ৫ শত টাকার ট্রেড লাইসেন্স দুই অর্থবছরে বেড়েছে বেশ কয়েকগুণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জানান, গত ২২-২৩ অর্থবছরে পরিষদ থেকে তারা তাদের ব্যবসায়ীক একটি ট্রেড লাইসেন্স নেন ৫ শত ৭৫ টাকা দিয়ে। সেই ট্রেড লাইসেন্সটি ২৩-২৪, ২৪-২৫ অর্থবছরে পরিষদ থেকে ৫ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে নেন। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে কয়েকগুণ হারে লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি করায় চরম ক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা। ইউনিয়ন তহবিলে কত আছে জানতে ইউনিয়নের হিসাব সহকারী শৈবাল ভৌমিককে ফোন দিলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে পরে কথা বলবেন লাইন কেটে দেন।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সজল কুমার দেব বলেন, অসুস্থতার কারণে চেয়ারম্যান গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির জন্য আবেদন করেন। আবেদনটি মঞ্জুরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী বলেন, অসুস্থতাজনিত কারণে ৩ মাসের ছুটির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করেছি। তাই নাগরিক সেবা যাতে বঞ্চিত না হয় সেজন্য আমি পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি।
ছুটি মঞ্জুর হওয়ার আগে কীভাবে একজন চেয়ারম্যান দায়িত্বশীল জায়গা ছেড়ে চলে যান- এমন প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ছুটির আবেদনটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আবেদনটি মঞ্জুর হয়েছে কিনা সেটি জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি