বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের নিকট হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দাওয়াতনামা প্রেরণ
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ
১. রোমের বাদশাহ হিরাকলের নিকট হযরত দাহীয়া ইবনে খঞ্জীফার মারফতে একখানা গ্রন্থ প্রেরণ করেন। হুজুর (সা.)-এর নবুওয়ত সম্পর্কে বিশ্বাস থাকা সত্তে¡ও সে ঈমান আনে নি।
২. পারস্যের বাদশাহ কিসরার নিকট হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হুজাফা সাহমীর মাধ্যমে প্রিয় নবী (সা.) একখানা পত্র প্রেরণ করেন। সে হুজুর (সা.)-এর সেই পত্র টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়েছিল। এই সংবাদ শ্রবণ করে হুজুর (সা.) ইরশাদ করেছিলেন ‘আল্লাহ্ তা’আলা তার রাজত্বও টুকরো টুকরো করে দেবেন। অতঃপর তাই হয়েছিল।
৩. হাবশার বাদশা নাজ্জাশীর নিকট আমর ইবনে উমাইয়া দামিরীর মাধ্যমে একখানা পত্র প্রেরণ করেন। ইনি সেই নাজ্জাশী নয়, যার শাসনামলে মুসলমানগণ হাবশার দিকে হিজরত করেন এবং হুযুর (সা.) যার জানাযার নামায আদায় করেছিলেন। ইনি পরে হাবশার বাদশাহ হন। তবে তাঁর ইসলাম গ্রহণ করার কথা অবগত হওয়া যায়নি।
৪. হুযুরে আকরাম (সা.) মিসরের বাদশাহ মিকাউকাস-এর নিকট পত্র প্রেরণ করেছিলেন হাতিব ইবনে আবিবালতার মাধ্যমে। সে ইসলাম গ্রহণ করেনি তবে উপঢৌকন প্রেরণ করেছিল।
৫. হযরত আলা’ ইবনে হাজরামীর হাতে বাহরাইনের বাদশা মুনজির সাবীর নিকট একখানা পত্র প্রেরণ করেন। তিনি মুসলমান হন। তাই তার রাজত্বও অব্যাহত রাখা হয়।
৬. আম্মানের দুজন বাদশা জিফর ইবনে জালানদী এবং ওয়াইদ ইবনে জালানদীর নিকট হযরত আমর ইবনুল আস-এর মাধ্যমে পত্র প্রেরণ করা হয়। তাঁরা উভয়েই ইসলাম গ্রহণ করেন।
৭. হযরত সালিত ইবনে আমর আমেরীর মারফত ইয়ামামার গভর্নর হাউজ ইবনে আলীর নিকট পত্র প্রেরণ করেন কিন্তু সে ইসলাম গ্রহণ করেনি।
৮. দামিশকের গভর্নর হারিস ইবনে আবি সামর গামসানীর নিকষ্ট সুজা’ ইবনে ওহাবের হাতে হুদায়বিয়া থেকে প্রত্যাবর্তনের পথে পত্র প্রেরণ করা হয়।
৯. জাবালা ইবনে আইহাম দাসামীকে সূজা ইবনে ওহব-এর মারফত পত্র পৌঁছানো হয়। এবং এরই সঙ্গে সঙ্গে তদানীন্তন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাদশাহগণ হুযুর (সা.)-এর সমীপে যে আবেদন পেশ করেছেন এখানে তাও উল্লেখ করা সমীচীন মনে করি।
সীরাতে ইবনে হিশামে রয়েছে যে, হুযুর (সা.) যখন তাবুক থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলেন তখন হুমায়ের বাদশাহ্, নিজের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ সম্পর্কীয় আবেদন লিখিতভাবে কয়েকজন দূতের মাধ্যমে হুজুর (সা.)-এর দরবারে প্রেরণ করেছিলেন। দূতদের নাম :
(১) হারিস ইবনে আবূদে কালাল। (২) নঈম ইবনে আবদে কালাল। (৩) নু’মান য-রাঈন, মা’ফির এবং হামদানের গভর্নর। (৪) জারআ’ মু-য়াজান, এরা সকলেই ইয়ামেনের বাদশাহ। (৫) ফারওয়াহ ইবনে আমর রোমের নিকটবর্তী এক প্রদেশের গভর্নর ছিলেন। তিনি নিজের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কীয় সংবাদ দূত মাধ্যমে প্রেরণ করেন। রোমবাসী প্রথমে তাঁকে বন্দী করে। অতঃপর শহীদ করে। ৬. পারস্যের নিকটবর্তী ইয়ামেনের একটি প্রদেশের গভর্নর নিজ দুই পুত্র এবং পারস্য ও ইয়ামেনের সেই সমস্ত লোকসহ যারা তার নিকট ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এ সংবাদ মহানবী (সা.)-এর দরবারে প্রেরণ করেন।
সীরাতে ইবনে হিশামে রয়েছে যে, রেফা’ ইবনে জায়িদ জুযামীর হাতে তার গোত্রের জন্য একটি দাওয়াতনামা প্রেরণ করা হয়। অতঃপর তাঁরা ইসলাম গ্রহণ করেন। বুখারী শরীফের শরাহ ‘কেরামী’ নামক গ্রন্থে ইয়ামেনের বাদশাদের মধ্যে গুলকেলা হুমায়রী এবং স্ব-আমরের ইসলাম গ্রহণের পর মহানবী (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য রওয়ানা করার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তাঁরা প্রিয় নবী (সা.)-এর জীবদ্দশায় পৌঁছতে পারেন নি।
যে ফুলের খুশবুতে সারা জাহান মাতোয়ারা : মওলানা আশরাফ আলী থানবি (র.)