মৌলভীবাজারের নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
মৌলভীবাজারের প্রধান চারটি নদ-নদীর মধ্যে তিনটির পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে মনু নদের পানি রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু নদের পানি কিছুটা কমলেও বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। অপরদিকে ধলাই নদের পানি বিপদসীমার অনেকটা নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও লোকালয়ে প্রবেশ করে শহরযলী প্লাবিত করেছে। ভারতে ত্রিপুরায় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং উজানে ঢলের পানি কমে আসায় জেলার নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
রাজনগরে মনু নদের একাধিক ভাঙনে বন্যাকবলিত এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নিচের দিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। গত চার দিনে জেলার সাত উপজেলার ৪৯ ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার বাসাবাড়ি, আঞ্চলিক মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। সদরের সঙ্গে এসব উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। এখনও তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তবে পানি কমতে শুরু করায় মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় শনিবার দুপুর ৩টায় নদ-নদীর পানির তথ্য-উপাত্তে জানিয়েছে, মনু নদের পানি রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপদসীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে এসেছে। অপর দিকে মনু নদের চাঁদনীঘাটে পানি ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী শেরপুরে ৮ সেন্টিমিটার এবং জুড়ী নদী ভবানীপুরে ১৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কমলগঞ্জে ধলাই নদের পানি অনেকটাই কমে গেছে। ধলাই রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপদসীমার ২২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুরে পানি কিছুটা বাড়ছে। অন্য সব নদ-নদীতে কমছে।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, জেলার সাত উপজেলায় বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৯৫ হাজার ২৪৫ জন। ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন সাত হাজার ১৪৫ জন। পৌরসভা ও ইউনিয়ন মিলে ৪৭টি এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ২১২টি গ্রাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮৫ মেট্রিক টন চাল ও সাত উপজেলায় ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ হয়েছে। মেডিক্যাল টিম রয়েছে ৬০টি। মজুতকৃত টাকা আছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার। চাল আছে এক হাজার ৩৪ মেট্রিক টন।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, নদ-নদীর পানি কমছে। এতে নদীতে পানির চাপ কমছে। রাজনগরে ভাঙন দিয়ে পানি বের হলেও পানির গতি আগের মতো নেই। গতি কমে আসছে। উজানে বৃষ্টিপাত নেই। আমাদের কাছে যেটুকু তথ্য আসছে, তাতে ভারতের কৈলাশহরেও পানি কমছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতির ভালোই উন্নতি হবে আশা করছি।