মনুর ভাঙনে মৌলভীবাজার টু শেরপুর ও কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৪, ৬:৩১ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
টানা ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানি ঢলে আকষ্মিক বন্যায় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কমলগঞ্জ, বড়লেখা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, আঞ্চলিক মাহসড়ক, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। সড়কে পানি উঠে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলা সদরের সাথে। বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলায় নতুন করে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে মনু নদীর টিলাগাঁও এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কুলাউড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম।
মনু নদীর ভাঙনে রাজনগর উপজেলার টেংরা, কামারচাক, মনসুরনগর, রাজনগর সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে।
সরজমেিন রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকায় গেলে দেখা যায়, মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানির তীব্র স্রোতে ভেসে আসছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কদমহাটা এলাকা। যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জেলা সদরের সাথে চারটি উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এইদিকে শহরতলীর শাহবন্দর এলাকা থেকে শেরপুর পর্যন্ত সড়ককে বাঁধ ভাঙার ঝুঁকির কারণ দেকিয়ে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
কদমহাটা এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মুনায়েম কবির বলেন, রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। এখানে চতুরদিকে পানি আর পানি। ২০১৮ সালে মনু নদী ভাঙনে একই জায়গায় প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এবছর একই জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। যদি এই বাঁধটি আগে সঠিকভাবে দেওয়া হত তাহলে এরকম ঘটনা ঘটতো না। আমরা পানিবন্দি হতাম না।
তিনি বলেন, উপজেলার অনেক বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেকেই তাদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু পানির তীব্র স্রোতের কারণে তারা বাড়ি থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারছেন না। আমরা সেনাবাহিনীকে বলেছি স্পীড বোটের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার। সেনাবাহিনী বলেছে তারা উদ্ধার কাজ চালাবে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা আপডেট অনুযায়ী জেলার মনু নদী (রেলওয়ে ব্রীজ) বিপদসীমার ৭৫ সে.মি, চাঁদনীঘাট এলাকায় ১১৯ সে.মি, ধলাই নদীতে ২৮ সে.মি ও জুড়ী নদীতে বিপদসীমার ১৯৪ সে.মি এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ২১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে ১৬ টি, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪৩২৫ জন লোক, মেডিক্যাল টিম রয়েছে ২৫টি।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদীতে পানি কমেছে। নিচের দিকে পানি বাড়ছে। রাতে মনু নদীর উজানে ভাঙন দিয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে। এ ছাড়া যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেগুলোতে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।