এমাদ উদ্দিন ভাইসাব আপনাকে ভুলা যাবে না: হাফিজ সাব্বির আহমদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুলাই ২০২৪, ৬:৩৫ অপরাহ্ণ
হাফিজ সাব্বির আহমদ::
জীবনের অপরপ্রান্তে মরনের শ্বাশ্বত রশি। দুদিন আগে-পিছে সকলকেই একদিন পৃথিবীর মায়ামোহ ত্যাগ করে চলে যেতে হয়। রয়ে যায় মানুষের হাজার স্মৃতি ও ভালো কর্মগুলো। কিছু কিছু মহৎপ্রাণ অন্যদের চেয়ে নিজগুনে মানুষের মনে জায়গা করে নেন। তেমনি একজন প্রিয় ও শ্রদ্ধার মানুষ মরহুম হাজী এমাদ উদ্দিন ভাইসাব। মূলত ব্রিটেনের প্রবাস জীবনে এই পরিবারের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। দ্বীনি মারকাজ সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টার বার্মিংহাম, ইউকের অন্যতম পরিচালক আলহাজ জসিম উদ্দিন ভাইয়ের আপন বড় ভাই ছিলেন এমাদ ভাইসাব। দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগে আজ থেকে ৪ বছর আগে ১৫ জুলাই তিনি ইন্তেকাল করেন।
৮ জুলাই বাংলাদেশে ইন্তেকাল করেন আমার মেঝভাই আলহাজ মাওলানা নাসির উদ্দিন। তাঁর মৃত্যুর একসপ্তাহ পর ১৫ জুলাই ইন্তেকাল হন এমাদ ভাই। একসাথে প্রিয় এই দুই ভাইয়ের মৃত্যু আমাকে যারপর নাই ব্যথিত করে। এমাদ ভাই যখন মূমূর্ষূ অবস্থায় তখন আমি আর শাহজালাল জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মাওলানা নূরুজ্জামান সাব তাঁর পাশে বসে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করছিলাম। একপর্যায়ে আমার আরেক ছোটভাই (শ্যালক) মাহফুজ উনার মুখে জমজমের পানি দেন। তারপরই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তখন এক বেদনাবিদূর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রিয়জনের চলে যাওয়া হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়।
ব্রিটেনে দ্বীনি কাজে তিনি ছিলেন আমার একজন বিশ্বস্থ অভিভাবক ও সহযোগী। ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার কভেন্ট্রি, ইউকের উপদেষ্টা। সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ বার্মিংহামের মুসল্লি ও শুভাকাঙ্ক্ষী। যখনই কোন মাহফিল ইন্তেজামের কর্মসূচি হাতে নিতাম তিনি সাপোর্ট করতেন ও কাজ শুরু করার তাগিদ দিতেন। সিরাজাম মুনিরা প্রতিষ্ঠার পর যখনই বিদেশি কোন মেহমান এখানে তশরিফ নিতেন তিনি তাদের মেহমানদারির দায়িত্ব আনজাম দিতেন। এছাড়া নিজহাতে মেহমানদের খাবার পরিবেশন করতে পছন্দ করতেন।
দেশ-বিদেশের সকল জায়গায়ই তাদের খেদমতের ধারাবাহিতা চলমান। দেশে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মানিককোনায় প্রতিষ্ঠিত শাম্স উদ্দিন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে মানবতার কল্যাণে খেদমত আঞ্জাম দেওয়া হয়। এছাড়া নিজগ্রামে দ্বীনের খেদমতে হাফিজিয়া মাদরাসা পরিচালনাসহ নানান ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকান্ড চলমান রয়েছে। একবার দেশে থাকাকালে ধর্মীয় একটি উগ্রপন্থী সংগঠনের ক্যাডাররা তার উপর আক্রমণ করে। শরীরের রক্তঝরে ফুলতলী মসলকের এই নিবেদিত প্রাণের। আজীবন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলার দামন্দের নিচে থেকে খেদমত করে গেছেন। আল্লাহ যেন তার দুনিয়াবি কসুরি ক্ষমা করে তাঁকে জান্নাতের আলা মাকাম নসিব করেন। বিশেষ করে বাবাহীন দুটি পুত্র ও মেয়ের জীবনের উজ্জ্বলতা কামনা করি। আল্লাহ তার পরিবারকে রহমতের ছায়ায় আচ্ছাদিত করে রাখেন। আমিন।
হাফিজ সাব্বির আহমদ: পরিচালক, সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টার, বার্মিংহাম, ইউকে।
প্রকাশক: সাপ্তাহিক পূর্বদিক, বাংলাদেশ।