কমলগঞ্জে চেয়ার দখলে নিতে ভোট ছাড়াই ‘স্কুল পরিচালনা কমিটি’
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুন ২০২৪, ৩:৫০ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ‘চেয়ার দখলে নিতে’ অনিয়মের মাধ্যমে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুলের কমিটি গঠনে অনিয়ম অভিযোগ উঠেছে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গত ২৭ জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্টানের ফান্ড আত্মসাৎ ও চেয়ার দখলে নিতে আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের কমিটি দখলে নিতে চায় একটি সিন্ডিকেট। সদ্য উপজেলা নির্বাচন কালীন সময়ে এই বিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের অভিবাবক যখন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত ছিলেন, সেই সময়ে কারো মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে কাগজে কলমে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে রেকর্ড করা হয়। যারা প্রার্থী হয়েছিলেন কৌশলে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে সিলেকশনে অভিবাবক প্রতিনিধি মনোনীত করা হয়। কোন ভোটাধিকার প্রয়োগ করা হয়নি। যেখানে অনেক অভিবাবক ও এলাকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য হিসাবে অনেকের কাছে বিচার প্রার্থী হয়েছেন। কারো মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে একটি সিন্ডিকেট বাহিনী তাদের মনোনীত লোকদের অভিবাবক সদস্য মনোনীত করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে সভাপতি নির্বাচিত করার পূর্ব নকশা করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গেল কয়েক বছর ধরে দেশের জ্ঞানী গুণীদের পরামর্শ নিয়ে একটি যুগোপযোগী স্কুল পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন জারি করে, যেখানে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্টানে যে প্রক্রিয়ায় এই চক্র নির্বাচন করতে যাচ্ছেন তা নতুন ম্যানেজিং কমিটি পরিচালনা গাইডলাইন ২০২৪ এর সাথে সাংঘর্ষিক। আগামী রবিবার এই চক্র পূর্ব পরিকল্পিত সভাপতি নির্বাচন মঞ্চায়িত করতে যাচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুরে অবস্থিত আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৬ মে ম্যানিজিং কমিটির নির্বাচনের তপশিল ঘোষনা করেন উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা। ২৩ জুন অভিবাবক সদস্য ৫ পদে ৫জনের বেশি প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিন্বন্ধীতায় তারা নির্বাচিত হন।
অভিযোগ উঠেছে নির্বাচনে মনোনয়পত্র জমা দেয়া বাকি প্রার্থীদের মনোনয়পত্র জোরপূর্বক প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কমিটি ও চেয়ার নিজেদের দখলে নিতে একটি চক্র যারা যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছেন। অনেককে ভয় দেখিয়েও প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। মূলত স্কুলে ফান্ড লূটপাট করা তাদের মূল লক্ষ্য।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল আহাদ বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ প্রিজাইডিং অফিসার চালান। বর্তমান পরিচালনা কমিটি এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারেনা। এখন কে কারা কখন কিভাবে নির্বাচিত হয়েছে প্রিজাইডিং অফিসার বলতে পারবেন, এটা তার দায়ভার।
ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাঈদ নাজমুল হাসান বলেন, অভিবাবক, শিক্ষক ও দাতা সদস্য পদে ৯টি পদে ১০ জন প্রার্থী ছিলেন। একজন মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করায় ভোটগ্ৰহণ হয়নি। যার কারণে সকল পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিন্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এবিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদিন বলেন, আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমি প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করতে পারি, এর বেশি হস্তক্ষেপে করার সুযোগ নেই। এখন কারো অভিযোগ থাকলে সেটা সমাধানের জন্য আদালতে যেতে পারবেন।