সাতবার এমপি হওয়ার পর কৃষি মন্ত্রী হলেন আব্দুস শহীদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ৪:১১ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
মৌলভীবাজার -৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর কৃষি মন্ত্রী হওয়ার খবরে মৌলভীবাজার জেলাসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বইছে আনন্দের বন্যা।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীকেও শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ রণাঙ্গনের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। হাওর টিলা বেষ্ঠিত চা শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকায় টানা ছয় বারের সংসদ সদস্য ছিলেন। এবার নিয়ে মোট সাতবার এ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি সদা অবিচল থাকা একজন সজ্জন, বিনয়ী, সৎ, কর্মঠ ও জনপ্রিয় এ নেতা তৃণম‚ল মানুষের ও দলীয় নেতাকর্মীর সুখ-দুঃখের ভাগিদার। দীর্ঘকাল ধরে দলের জন্য সর্বস্ব দিয়ে কাজ করে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ততা অর্জন করেছেন। তাঁর মন্ত্রিত্ব পাওয়ার সুখবরে উচ্ছ্বসিত তৃণম‚লেরনেতা-কর্মীরা সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষজন। সাধারণ জনগণের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা ।
উপাধ্যক্ষ ড.মো.আব্দুস শহীদ ১৯৭৩ সালে কমলগঞ্জ গণ মহা বিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডয়িাম সদস্য ছিলেন। তিনি প্যানেল স্পিকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের তিনি ২ লাখ ১২ হাজার ৪৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যান্য এমপিদের সঙ্গে ধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে শপথ নেন আব্দুস শহীদও। শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় তিনি মন্ত্রী সভায় সদস্য হওয়ার সুখবর পান সিলেট বিভাগের বর্তমান সময়কার অন্যতম এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ।
ড. মো. আব্দুস শহীদ কৃষি মন্ত্রী হয়েছেন এমন গুঞ্জন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সন্ধ্যার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা। সেই তালিকায় আব্দুস শহীদের নাম থাকায় নিজের দলীয় নেতাকর্মীসহ এ সংসদীয় আসনের জনতার মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। পরে নতুন মন্ত্রিসভার নামের তালিকায় তার নাম মন্ত্রী পরিষদ থেকে মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় পরক্ষণ থেকেই এ সংসদীয় আসনের সাধারণ মানুষজন আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন।
উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ১৯৯১ সালে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালে তিনি এ আসন থেকে জয়লাভ করেন।
১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ, ২০০১- ২০০৬ পর্যন্ত সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ এবং ২০০৯- ২০১৪ পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১০ম সংসদের তিনি সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২০১৮-২০২৩ পর্যন্ত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির পালন করেন। এছাড়া তিনি সংসদ কমিটি, পিটিশন কমিটি ও কার্যপ্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জাকুকারও তিনি সদস্য ছিলেন।
দীর্ঘ ৩০ বছরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রয়েছে তাঁর অবদান। প্রবীন এ অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান তাঁর তৃণম‚লের নেতা-কর্মী সহ সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার তাঁকে মন্ত্রীত্ব দেয়ায় চা বাগান সহ সর্বত্র আনন্দে ভাসছে। একাধারে চলছে মিষ্টি বিতরণ। উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এর কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা মেডিকেল কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, পর্যটন খ্যাতে উন্নয়ন সহ মৌলভীবাজার জেলাকে উন্নয়নে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন, এমন প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
মন্ত্রী হওয়ার খবরে উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন পেয়েছেন তিনি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েই এই সরকার তার যাত্রা শুরু করেছে। আমি চাইবো স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একজন সৈনিক হতে। আমার নির্বাচনী এলাকায় অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেসব কাজ এখনও শেষ করেতে পারি নি, সেসব কাজ এবার শেষ করতে পারবো বলে আমি মনে করি।